সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করা এক শ্রমিককে চুরির অপবাদে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আরও এক শ্রমিককে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। শুক্রবার সকালে হাসপাতালের নির্মাণাধীন একটি ভবনে ঘটনাটি ঘটে। নিহত ও আটকরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোম্পানির শ্রমিক ও কর্মচারী বলে জানা গেছে।
নিহত শ্রমিক নয়ন (২০)। তিনি সিলেটের বিশ্বনাথের বাসিন্দা। গত ২৫ দিন ধরে তিনি সেখানে কাজ করছিলেন। আর গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন- কুড়িগ্রামের কচাকাঁটা থানাধীন নারায়ণপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম, একই গ্রামের আয়নাম, সাবান আলী ও দিনাজপুর বিরল উপজেলার তেঘারা গ্রামের রুবেল মিয়া।
এর আগে গত ৩ জুন একই কোম্পানির শ্রমিক নগর ভবনের ১২ তলায় কাজ করতে গিয়ে নীচে লোহার পাইপ ফেলে দিলে সেনাসদস্য দিলোয়ার হোসেইন মারা যান। ওই ঘটনায় মামলা করা হয় সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের বিরুদ্ধে। গ্রেফতারে বিষয়টি নিশ্চিত করে এসএমপির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মোহাম্মদ মাহমুদ জানান, ঘটনার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, নয়ন ও আইযুবকে সকাল ৬টার দিকে ধরে নিয়ে মারধর করা হয়। ৪টি মোবাইল ও টাকা চুরির অভিযোগে ম্যানেজারসহ ৪-৫ জন তাদের মারধর করেন। আহত আইয়ুব গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তারা চুরি করেননি। মারধরকালে তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেললেও পানি খেতে চাইলে দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় নয়ন মারা গেলে তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আইয়ুবের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট অফিসে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি।
এসএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের অংশে ১০ তলা ভবনের নির্মাণ কাজের শ্রমিক ছিলেন নয়ন। ভবনের কাজ করছে জামাল অ্যান্ড কোম্পানি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মোবাইল ও টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে নয়নকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে দুই শ্রমিককে ধরে নেন জামাল অ্যান্ড কোম্পানির সাইট ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন। তাদের একটি কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। নয়ন ঘটনাস্থলেই মারা যান। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আইয়ুব আলী নামের এক শ্রমিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।