বিশ্বের ৮০ কোটি মানুষ ক্ষুধা নিয়ে ঘুমান!

25

 

কাজির বাজর ডেস্ক

ক্ষুধার্ত থাকার সংখ্যা বিশ্বব্যাপী বাড়ছে। বিশ্বের ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ প্রতিরাতে ক্ষুধার্ত পেটে ঘুমাতে যান। মানে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ মানুষই নূন্যতম প্রয়োজন মেটানোর খাবারও পান না।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, আগের বছরের তুলনায় এ বছর ক্ষুধার্ত থাকার সংখ্যা ৪ কোটি ৬০ লাখ বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষুধার্তদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ হলেন নারী এবং ৮০ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তন প্রবণ এলাকাগুলোতে বাস করেন।
বিশ্বে কয়েক দশক ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা কমেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েক বছরে সংখ্যাটি শুধুই বেড়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অপুষ্ট মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১৫ কোটি। বিশেষ করে বৈশ্বিক দ্ব›দ্ব, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক ধাক্কা এবং করোনা মহামারি এতে প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া খাবারের মূল্যও বেড়েছে। এটিও মানুষের ক্ষধার্ত থাকার পেছনে প্রভাব রেখেছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্ব দাম সূচক (এফপিআই) ৯৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪৩ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছেছে। যা নির্দেশ করছে অল্প সময়ের মধ্যে খাবারের দাম কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এফপিআই বিশ্বব্যাপী চিনি, মাংস, শস্য, দুগ্ধজাত পণ্য এবং ভোজ্যতেলসহ অন্যান খাবারের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টির হিসাব রাখে। জাতিসংঘের বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি সংস্থা (এসওএফআই) খুঁজে পেয়েছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অপুষ্ট মানুষ বসবাস করেন এশিয়ায়। ২০২১ সালে এই মহাদেশে ৪২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ক্ষুদার্থ অবস্থায় দিনযাপন করেছেন। যদিও ক্ষুদার্থ থাকার ব্যাপকতা লক্ষ্য করা গেছে আফ্রিকায়। সে বছর এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছিলেন আফ্রিকার ২৭ কোটি ৮০ লাখ মানুষ। খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা বৈশ্বিক সংস্থা ‘গেøাবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস’ সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২২ সালে টানা চতুর্থবারের মতো চরম ক্ষুধার্ত থাকার সংখ্যা বেড়েছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ২৫ কোটি ৮০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে ভোগেন। এদিকে ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ বাধে। বিশ্বের মোট খাদ্য শস্যের বড় একটি অংশ আসত এ দুটি দেশ থেকে। আর এ যুদ্ধের কারণে খাদ্য সরবরাহে বড় বিঘœ ঘটে। যার কারণে বিশ্বের প্রায় সব দেশে বেড়ে যায় খাদ্যের দাম। ক্ষুধা হলো শরীরের একটি দুর্বল অবস্থা। একটি নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও যখন শরীরে কোনো খাবার দেওয়া না হয় তখন ক্ষুধা অনুভব হয়।
দীর্ঘ সময় ক্ষুধার্থ থাকার বিষয়টি শরীরে চিরস্থায়ী ও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা এক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে।