কাজির বাজার ডেস্ক
বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে এতে সরকার ‘মোটেও ভীত নয়’ বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত ভিসানীতির প্রতিক্রিয়া এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, যে বক্তব্য তারা (যুক্তরাষ্ট্র) দিয়েছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেটা চাচ্ছেন; তারা (যুক্তরাষ্ট্র) তাকে আরও জোরালোভাবে বলেছেন। আমাদের অঙ্গীকার এবং অবস্থান সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন করতে চাই। এটাকেই তারা সমর্থন দিয়েছে। সুতরাং চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। মোমেন বলেন, আমেরিকার এই ভিসার রেস্ট্রিকশন শুধু সরকারি দলের ওপর না, অপজিশনের লোকজনেরও ওপর বর্তাবে। এতে করে আমরা আশা করি, এবার তারা (বিএনপি) ইনশাআল্লাহ একটু সচেতন হবে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ওপর বিশ্বাস রাখে এবং জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকারে আসতে চায়। আমরা গণতান্ত্রিক সরকার চাই। আমরা স্বচ্ছ নির্বাচন করে যাব। জ্বালাও-পোড়াও চাই না। আমেরিকা যে নীতি করেছে এতে করে জ্বালাও-পোড়াও দলরা একটু সচেতন হবে। জ্বালাও-পোড়াও ও রাস্তা দখল করে আন্দোলন, এটা কমবে।
তিনি বলেন, দুষ্টু লোকরা দেখেন না জ্বালাও-পোড়াও করে। সম্প্রতি পুলিশকে পিটিয়েছে, বাস জ্বালিয়েছে, এখন তারা একটু সাবধান হবে। আমেরিকা বলেছে, তাদের যে নীতি সরকারি দল বা অন্যদের জন্য যেমন তেমনি অপজিশনের জন্যও। তাদের ওপরও বর্তাবে। তারা ইনশাআল্লাহ সাবধান হবে। নির্বাচন নিয়ে সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাড়তি চাপ অনুভব করছে কী না-জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) তাদের কাজ করেছে। আমরা আমাদের কাজ করব। যুক্তরাষ্ট্রের ওই ভিসা নীতি নিয়ে সরকার ‘মোটেও ভীত নয়’ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শুনছি তো যে ওটা সব দেশের জন্য। ভালো তো। চিন্তার কিছু নাই। এটা বরং আমাদের অবস্থানকে আরও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছে। আমরা স্বচ্ছ সুন্দর ইলেকশন করে দেব।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে বুধবার নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøঙ্কেন। বিবৃতেতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে আমি আজ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ২১২ (এ) (৩) (সি) (৩সি) ধারার আওতায় নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে।
বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নতুন এ নীতির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।