স্টাফ রিপোর্টার
মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিলেট সিটি করেপারেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এরআগে বেলা ১২টার দিকে শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যান আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
নির্বাচন কমিশনের সিটি করেপারেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোন প্রকার মিছিল বা শো-ডাউন করা যাবে না বা প্রার্থী ৫ জনের অধিক সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ বা জমা দিতে পারবেন না। তবে মঙ্গলবার মনোনয়ত্র জমাদানকালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সাথে শতাধিক নেতাকর্মী ছিলেন। মনোনয়নপত্র জমাদান শেষে ফিরে যাওয়ার সময় সেøাগান দিতে দেখা যায় তাদের অনেককে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদির বলেন, আনোয়ারুজ্জামান মনোনয়নপত্র জমাদানকালে অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী এবং সাংবাদিকরা এখানে উপস্থিত ছিলেন। ফলে ভিড় লেগে যায়। তবে আমাদের কার্যালয়ের বাইরে কোন শো-ডাউন করা হয়েছে কি-না খেয়াল করিনি। তিনি বলেন, প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ৫ জনের বেশি লোক নিয়ে আসতে পারবেন না। নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে সবাই মেনে চলেন এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক রয়েছি।
আচরণিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমি গুটিকয়েক নেতাকর্মী নিয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়েছি। তবে বাইরে অনেক কর্মী সমর্থক ছিলেন। তাদের আমি নিয়ে যাইনি।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মনোনয়নপত্র জমাদানকালে তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে অন্যদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি সুব্রত পুরকায়স্থ, অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার প্রমুখ।
আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে হবে। মঙ্গলবার ছিলো মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর ১ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।
মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আনোয়ারুজ্জামান ছাড়া অন্যরা হলেন- জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলনের মাহমুদুল হাসান, জাকের পার্টির জহিরুল আলম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবদুল হানিফ কুটু, আবদুল মান্নান খান ও সামছুন নুর তালুকদার।
২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ২০১৩ সাথে তৃতীয় ও ২০১৮ সালে চতুর্থ নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। চারটি নির্বাচনেই মূল প্রতিদ্বদ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। অন্য দলীয় বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সামান্য প্রতিদ্ব›িদ্বতাও গড়তে পারেননি। এবার বিএনপিদলীয় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে দলটির যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে।