স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের গোলাপগঞ্জের শ্রীচৈনত্যদেবের মন্দির থেকে চোরচক্রের ২৭ জন সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ২৪ জনই নারী। এই নারীরা ধর্মে মুসলমান হলেও শাঁখা-সিদুর পরে হিন্দু সেজে ছদ্মবেশে চুরিতে অংশ নিতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এদের আটকের তথ্য জানায় গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ২৭ জনকেই রোববার আটক করা হয় বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত দায়িত্ব, গোলাপগঞ্জ সার্কেল) আশরাফুজ্জামান জানান, গোলাপগঞ্জ থানার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের মিশ্রপাড়া গ্রামে অবস্থিত শ্রীচৈতন্য দেব মন্দিরে বার্ষিক বারনীমেলা চলছে। এই মেলায় আগত পুর্ণার্থীদের বিভিন্ন মালামাল খোয়া যাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গোয়েন্দাা অভিযানেই ২৪ নারীসহ ২৭ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের কাছ থেকে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা এবং হিন্দু নারীদের ব্যবহৃত হাতের শাঁখা উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের প্রত্যেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানাধীন ধরমÐল গ্রামের বাসিন্দা এবং একটি আন্তঃজেলা চোরচক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা এরকম বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জড়ো হয়ে চুরি করে থাকে। শ্রীচৈতন্য মন্দিরে মেলায় চুরির উদ্দেশে আসেন এবং সুকৌশলে নিজেরা ভিড় তৈরি করে পূণ্যার্থীদের অলংকার ও নগদ অর্থ হাতিয়ে নেন।
অভিযানে আটককৃতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারজিন বেগম (৩০), নাজমা বেগম (৩২), রিমা আক্তার (২৮), মহিমা আক্তার (৩৫), ৫) পপি বেগম (৩০), ৬) আয়েশা বেগম (৩৫), সুমি বেগম (৩০), বিলকিস বেগম (২৮), সুফিয়া বেগম (২২), শাহিদা বেগম (২৮), লুৎফা বেগম (২৫), নাজমা বেগম (৩০), রোকসানা বেগম (২৫), সালমা বেগম (৩৫), তাছলিমা বেগম (৩৫), রোজিনা বেগম (৩০), লাভলী আক্তার (৩৫), আছমা বেগম (৩৮), পারভিন বেগম (৩০), তাছলিমা আক্তার (৩৫), অনু আক্তার (৩০), আমেনা বেগম (৩০), ফুলচান বিবি (২৮), আছমা বেগম (২৫), হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সুহেল মিয়া, শাহিন আলম (২০) ও সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ছাইদুল ইসলাম।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আলামতের মধ্যে রয়েছে- স্বর্ণের চেন ৯টি, হাতের বালা ১ জোড়া, চুড়ি ৪ জোড়া, কানের দুল ১৪ জোড়া, রূপা সদৃশ চেন ৮টি, রূপা সদৃশ নুপুর ৮টি, হিন্দু নারীদের ব্যবহৃত হাতের শাঁখা ৬টি, পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত নোহা মাইক্রোবাস ১টি এবং মোবাইল ফোন ৭টি। আটককৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান।