শহরতলীর বাদাঘাটে দেড় যুগ পর জেলা পরিষদের প্রায় চার একর জায়গা উদ্ধার

11

সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। জেলা পরিষদের উদ্যোগে রবিবার সকাল থেকে এই অভিযান শুরু হয়। এ অভিযানে প্রায় ১৮ বছর পর জেলা পরিষদের প্রায় চার একর জায়গা উদ্ধারে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
উচ্ছেদ অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট মো: নাসির উদ্দিন খান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: মাহবুবুর রহমান, প্যানেল চেয়ারম্যান মো: মতিউর রহমান, মস্তাক আহমদ পলাশ, জেলা পরিষদ সদস্য মোছাদ্দিক আহমদ, মো: নাসির উদ্দিন, মো: আব্দুল হামিদ, এ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ, ইফজাল আহমদ চৌধুরী উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসিব আহমেদ ও সূর্য্যসেন রায়, সার্ভেয়ার মফিজুর রহমান প্রমুখ।
জানা গেছে, বাদাঘাট বাজারে প্রায় ১৮ বছর আগে জেলা পরিষদের প্রায় চার একর জায়গার মধ্যে কতেক জায়গা বিভিন্ন জনকে একসনা লিজ দেওয়া হয়েছিল। একসনা লিজ অনুসারে এক বছর পর লিজ নবায়ন করা না হলে লিজকৃত জায়গা জেলা পরিষদের আওতায় চলে আসার কথা। কিন্তু তা আর হয়নি। যারা লিজ নিয়েছিলেন, তারা নবায়নও করেননি। গত প্রায় দেড় যুগ ধরে সেখানে স্থায়ীভাবে দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা।
সম্প্রতি এ জায়গার বিষয়টি জেলা পরিষদের নজরে আসে। জায়গা উদ্ধারে স্থানীয় ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদদের সাথে বৈঠক করা হয়। পরে দোকানপাট ও মালামাল সরিয়ে নিতে নোটিস ও নির্দিষ্ট সময় প্রদান করা হয়। নোটিসের পর অনেকেই নিজেদের মালামাল সরিয়ে নেন। তবে অনেকেই সেখানে রয়ে গিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ রবিবার সকাল ৯টা থেকে বুলডোজার নিয়ে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। এতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যও অংশগ্রহণ করছেন। অভিযান শুরুর পর অনেক ব্যবসায়ীকে নিজেদের মালামাল সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। এ অভিযানে আধাপাকা ও টিনের প্রায় ৭০ টি অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্যানেল চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ বলেন এখানে একসনা লিজ দেওয়া হয়েছিল এবং এখানে দোকানপাট নির্মাণের কোনো বিধিবিধান ছিল না। তারপরও ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘একসনা লিজের শর্ত অনুসারে, কোনো অবস্থায় লিজকৃত জায়গায় স্থায়ীভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। এসব শর্তাবলি কেউ লঙ্ঘন করলে লিজ আপনাআপনি বাতিল হয়ে যায়। এসব শর্ত রেখেই এখানে একসনা লিজ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু লিজের শর্ত ভঙ্গ করে এখানে স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়।’
পলাশ জানান, স্থানীয়রা অভিযানে কোনো বাধা দেননি। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে অভিযানে সহযোগিতা করেছেন। তিনি জানান, উচ্ছেদকৃত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হবে। এদিকে, বাদাঘাট বাজারে থাকা একটি মসজিদের জন্য জেলা পরিষদের জমি চান স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বলেন, ‘জেলা পরিষদের জায়গার নীতিমালা রয়েছে। নীতিমালা অনুসারে বাজার এলাকায় থাকা মসজিদকে জমি দান করা হবে, আর্থিকভাবেও সহযোগিতা করা হবে। এ মসজিদের নাম হবে জেলা পরিষদ বাদাঘাট বাজার মসজিদ।’ বিজ্ঞপ্তি