১২ লাখ বাংলাদেশীকে ভিসা দিয়েছে ভারত

9

স্টাফ রিপোর্টার :
উন্নত চিকিৎসায় বাংলাদেশের নাগরিকদের ভারতমূখীতা বাড়ছে। তাছাড়া, সম্প্রতি ট্যুরিস্ট ভিসাতে ভারত ভ্রমণ করছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী নাগরিক। ারতীয় হাইকমিশনের তথ্য মতে, ২০২২ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ৮ মাসে ভারতের ভিসা নিয়েছেন ১০ লাখ বাংলাদেশি।
করোনা মহামারির বিরতির পর, ভারতের সীমান্ত খুলে দিলে ২০২২ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৮ মাসে ভারতের ভিসা নিয়েছেন ১০ লাখ বাংলাদেশি। যার মধ্যে ২ লাখ ৭৩ হাজার রয়েছে মেডিকেল ভিসা।
এছাড়া ট্যুরিস্ট, ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য খাতে ভিসা আবেদন বেড়েছে। মাত্র ৮ মাসে বাংলাদেশ থেকে ভারত ভ্রমণের ভিসা নেয়ার এই পরিসংখ্যান অন্য যেকোন দেশের তুলনায় অনেক বেশি বলে জানায় হাইকমিশনের একটি সুত্র।
তাদের তথ্য মতে, করোনার আগে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৬ লাখের বেশি বাংলাদেশি ভারতের ভিসা নেন। ২০২১ সালে করোনাকালীন প্রতিকূল সময়ের মাঝেও অন্যান্য দেশের প্রতি ভারত সরকার কঠোর থাকলেও বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্যে লকডাউন সত্বেও প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার ভিসা ইস্যু করে ভারত, যার মধ্যে ১ লাখ ৯৬ হাজার ছিল মেডিকেল ভিসা।
করোনার প্রকোপ কমার পর প্রাথমিকভাবে বেনাপোল ও আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন দিয়ে টুরিস্ট ভিসাধারীদের প্রবেশের অনুমতি দেয় ভারত সরকার যদিও তখন করোনা নেগেটিভ সনদ বাধ্যতামূলক করেছিল তারা।
পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বর্তমানে বাংলাবান্ধা ফুলবাড়ি স্থলবন্দরের মতো ২/১টি বর্ডার ছাড়া বাংলাদেশিরা সর্বোচ্চ যে বন্দরগুলো ভারত প্রবেশের জন্যে ব্যবহার করে তা সচল রেখেছে ভারত সরকার যেখান দিয়ে প্রতিদিন শত শত বাংলাদেশি ভারতে যাচ্ছেন।
ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র ঢাকার ডেপুটি চিফ অপারেটিং অফিসার কিংশুক মিত্রের সাথে কথা বলে জানা যায়, একমাত্র বাংলাদেশেই ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তির সবচেয়ে বৃহত্তম অপারেটিং নেটওয়ার্ক রয়েছে এবং ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের যে ভিসা এ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (আইভ্যাক) রয়েছে তা সারাবিশ্বে ভারতের যত ভিসা সেন্টার আছে তাদের তুলনায় সবচেয়ে বড় ও আধুনিক।
ঢাকা ছাড়াও সারাদেশে আরো ১৪টি জেলায় রয়েছে তাদের সেন্টার সেগুলো হলো, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া, সিলেট, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাদের সবগুলো মিলে বিশ্বের বৃহত্তম ভিসা অপারেশন নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। তিনি জানান, ২০২২ সালের শেষ দিকে ঢাকায় তাদের সেন্টারসহ সকল আইভ্যাকে ভারতীয় ভিসার চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। অতিরিক্ত চাপে অধিকাংশ সময়ে তাদের জন্যে সময়মতো ভিসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়েছে তারপরেও তারা বাংলাদেশিদের তাদের দেশে ভ্রমনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন।
জানা যায়, ভিসা ব্যবস্থাকে সর্বজনীন করতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সংশোধিত ভ্রমণ চুক্তি ২০০১ সালের মে মাস থেকে চালু রয়েছে। এটি সর্বশেষ ২০১৮ সালের জুলাই মাসে সংশোধন করা হয় এবং দুই দেশই তাতে স্বাক্ষর করে। বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে ভিসা প্রদান করে ভারত। শুধুমাত্র ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার সুবিধার্থে ভারতীয় ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (আইভ্যাক) প্রতিটি আবেদনের জন্য ‘প্রসেসিং ফি’ বাবদ আটশত টাকা দিতে হয়।
কোভিড পরবর্তী গত বছর ও এই বছর বাংলাদেশিদের ভারতের ভিসা প্রাপ্তির পরিসংখ্যান অন্যান্য যেকোন সময়কে ছাড়িয়ে যাবে মর্মে জানান ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তারা।