কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে বর্তমানে প্রায় ২০ লাখের বেশি সচল ওয়াই-ফাই রাউটার রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশ আইপিভি-৬ (ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন-সিক্স) সমর্থন করে। অবশিষ্ট ৭০ শতাংশ তথা ১৪ লাখের বেশি সমর্থন করে না। প্রশ্ন হলো, আইপিভি-৬ চালু হলে এই বিশাল সংখ্যক রাউটারের কী হবে?
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি রাউটারের লাইফ সাইকেল (জীবন চক্র) তিন থেকে সাড়ে তিন বছর। ফলে দেশের সব রাউটার আইপিভি-৬ সমর্থিত হতে এই সময় প্রয়োজন হবে। তার আগে এটা করতে হলে বিশাল সংখ্যক রাউটার বাদ দিতে হবে।
প্রযুক্তি পণ্যের বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘দেশে এলসি খোলার ওপর কড়াকড়ি আরোপ থাকা, ডলারের সংকট, প্রযুক্তি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া ইত্যাদির কারণে রাউটারের আমদানি নেই বললেই চলে। ফলে আগামী তিন থেকে সাড়ে তিন বছরে এই সমস্যার সমাধান হবে না বলে তারা মনে করছেন। এসব কারণে দেশে আইপিভি-৬ পুরোপুরি বাস্তবায়নে আরও চার বছর লেগে যেতে পারে।’
জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ইন্টারেনেট ব্যবহারকারীর (১২ কোটির বেশি) মধ্যে সংখ্যার মাত্র ৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ আইপিভি-৬ ব্যবহারকারী। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত এপনিকের (এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার) ৪৯তম সম্মেলনে বাংলাদেশ ঘোষণা দেয়, বাংলাদেশে আইপিভি-৬ বাস্তবায়নের হার শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। দুই বছর শেষে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
এপনিকের (এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার) নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পলিসি চেয়ার সুমন আহমেদ সাবির বলেন, আইপিভি-৬ বাস্তবায়ন (ব্যবহার) হলে ইন্টারনেট ব্যবহারের কোয়ালিটি অব সার্ভিস ভালো হবে। আইএসপিগুলোর খরচ কম, যার প্রভার গ্রাহকের ওপরও পড়বে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপরাধীকে শনাক্তকরণ সহজ হবে।
তিনি মনে করেন, এই খাতের চ্যালেঞ্জ হলো ডিভাইস (ওয়াইফাই রাউটার)। ডিভাইস ডেপ্লয় করে আইপিভি-৬ বাস্তবায়নের দ্রুত ৫০ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব। আইএসপিগুলো চাইলেই এটা পারে। তিনি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের রাউটার কেনার আগে তা আইপিভি-৬ সাপোর্ট করে কি না, তা দেখে নেওয়ার আহ্বান জানান।
জানা যায়, দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে আইপিভি-৬ ব্যবহারের হার খুবই কম। আইএসপিগুলো এত দিন এই বিষয়ে উদাসীন থাকলেও সম্প্রতি তারা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়ে এই হার বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে এই ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে দেশের মোবাইলফোন অপারেটরগুলো। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চেয়ে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে আইপিভি-৬ ব্যবহারের হার বেশি। এর ব্যবহারে মোবাইল অপারেটরগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে গ্রামীণফোন। এরপর রয়েছে বাংলালিংক। রবির অবস্থান আরও পরে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোবাইল অপারেটররা বেশ জোরেশোরে এই ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে। অথচ আইএসপিগুলোর এই সুযোগ সবচেয়ে বেশি।