কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে হিজরতকারী ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন ভিত্তিক অ্যাপসে যোগাযোগের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, রবিবার (১ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিন্যাল, চট্টগ্রাম ও টেকনাফ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন আব্দুর রব, মো. সাকিব, মো. শামীম হোসেন, মো. নাদিম শেখ, মো. আবছার ও মো. সাইদ উদ্দিন। গ্রেফতারকৃতরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনভিত্তিক অ্যাপসে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দল গঠন করত। স্থানীয় সহযোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশে জঙ্গিবাদের জন্য টেকনাফে হিজরত করে অবস্থান করছিলেন। আব্দুর রব একজন হাফেজ এবং কওমি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে ২০১৯ সালের জুনে সৌদি-আরব চলে যান। সৌদিতে অবস্থানকালে সে অনলাইনে বিভিন্ন জিহাদি পোস্ট ও ভিডিও দেখে জিহাদের জন্য অনুপ্রাণিত হয়। অনলাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের একটি ভিডিও কমেন্টের সূত্র ধরে সাঈদের সাথে তার পরিচয় হয়। একইভাবে শামীম, সাকিব, নাদিমসহ ও আরও কয়েকজনের সাথে পরিচয় হয়। আব্দুর রব সমন্বয়ক হয়ে সবাইকে অনলাইনে একত্রিত করে শরীয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন, জিহাদ, প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে তাদের অনলাইনে বিদেশে অবস্থানরত এক বাংলাদেশি সহযোগীর সাথে পরিচয় হয় এবং অডিও-ভিডিও কলে যোগাযোগ স্থাপন করেন। বিদেশে অবস্থানরত ওই ব্যক্তি সবাইকে হিজরত করে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করে। পরবর্তীতে সেই সদস্য লিবিয়ায় অবস্থানরত আরও একজন বাংলাদেশি এবং টেকনাফের স্থানীয় একজনের সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দেন। সম্মিলিত আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় আব্দুর রব, শামীম, সাকিব, নাদিম, সাইদসহ অন্য যারা হিজরতে রাজি তারা প্রথমে টেকনাফ গিয়ে তাদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে ট্রেনিং গ্রহণ করবেন। পরবর্তীতে তারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য জিহাদ করবেন। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সবাইকে নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় টেকনাফে যাওয়ার পরামর্শ দিলে ১৬ নভেম্বর সাকিব ও নাদিম টেকনাফ যান এবং স্থানীয় সহযোগী ও গ্রেফতারকৃত আবছার তাদের টেকনাফে ভাড়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা করেন। আব্দুর রব ছুটি না পাওয়ায় যথা সময়ে দেশে আসতে ব্যর্থ হলে তারা টেকনাফের বাসায় অবস্থান করে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। ২২ নভেম্বর আব্দুর রব দেশে আসলে তার সহযোগী শামীম ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের অন্য সহযোগী ভাড়া করা বাসায় নিয়ে যায় এবং অবস্থান করে বিভিন্ন শলা-পরামর্শ করে। দুইদিন পর তারা দুজন গ্রেফতারকৃত সাকিবদের সাথে মিলিত হয় এবং তাদের অন্যান্য সহযোগীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।