ইকুয়েডরকে কাঁদিয়ে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে সেনেগাল

6

স্পোর্টস ডেস্ক :
পাপা দিওপ ঐ জগতে বসে নিশ্চয়ই হাততালি দিচ্ছেন তার দেশের বীরদের। ২০০২ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিওপের একমাত্র গোলেই ফ্রান্সকে ০-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছিল সেনেগাল। সেই দিওপের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী ছিল আজ ২৯ নভেম্বর।
তার মৃত্যুর দিনেই বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ইকুয়েডরের বিপক্ষে খেলতে নেমে যেন সবটুকু উজার করে খেলে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যায় সেনেগাল। উত্তেজনাপূর্ণ এই ম্যাচে ইকুয়েডরকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মত নকআউট রাউন্ডে জায়গা করে নিল আফ্রিকান দলটি। অথচ কে ভেবেছিল সাদিও মানেকে ছাড়াই দলটি এতদূর আগাবে!
ম্যাচের শুরু থেকেই ম্যাচ জয়ের পণ নিয়ে খেলতে নামে সেনেগাল। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অপরাজিত থাকা ইকুয়েডরের বিপক্ষে দাপট দেখাতে থাকে আফ্রিকান দলটি। ম্যাচের ৩ মিনিটেই সুযোগ পায় সেনেগাল। কিন্তু ইদ্রিস গায়ার শট গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ১২ মিনিটে আবারো সুযোগ পায় সেনেগাল। এবার এনদাইয়ের বাকানো শট গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও তা চলে যায় গোলবার ছুঁয়ে।
ইকুয়েডরের বিপক্ষে এর আগের দুই ম্যাচেই জয় লাভ করা সেনেগাল মাঝমাঠে বলের দখল নিয়ে ইকুয়েডরের রক্ষণভাগে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। যার দরুণ ম্যাচের ৪২ মিনিটে খেই হারিয়ে ফেলে ইকুয়েডর। ইসমাইল সারকে ডি বক্সর ভেতর ফাউল করে বসেন প্রিসাইডো। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে লাইফলাইন পায় সেনেগাল। স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে দেন ইসমাইল সার। শেষের দিকে আরো কিছু আক্রমণ করলেও তা দেখা পায়নি গোলের। ফলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় সেনেগাল।
বিরতি থেকে ফিরেই গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে ইকুয়েডর। ৫৮ মিনিটে ইস্তুপিনান ডিবক্সের ভেতর গোলের সুযোগ পান কিন্তু বল অতিরিক্ত বাউন্স করাতে আর কিক নিতে পারেননি। ৬৭ মিনিটেই ইকুয়েডরের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভাব হয় কাইসেডোর। কর্নার থেকে প্লাটার শটে টোরেসের হেড থেকে ডিবক্সের ভেতর বল পেয়েই সেটিকে গোলে পরিণত করেন কাইসেডো। পরের রাউন্ডে যেতে হলে ড্র করলেই চলবে ইকুয়েডরের এমন সমীকরণকে পেছনে ফেলে লাতিন দলটিকে যেন কাঁদিয়ে ছাড়লেন সেনেগালের অধিনায়ক কৌলিবালি।
কাইসেডোর গোলের ৩ মিনিট না পেরুতেই ডি বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় সেনেগাল। ইদ্রিস গায়ার ফ্রি কিক থেকে ডি বক্সের ভেতর ইকুয়েডরের খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বল যায় খালি জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা কৌলিবালির কাছে। সুযোগ কাজে লাগাতে একদমই দেরি করেননি এই নাপোলি ডিফেন্ডার।
গোল করে দলকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন তিনি। অথচ এটিই ছিল সেনেগালের জার্সি গায়ে তার প্রথম আন্তর্জাতিক গোল। শেষ দিকে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেললেও আর গোল পায়নি ইকুয়েডর। ফলে প্রথম দুই ম্যাচ দুর্দান্ত খেললেও শেষ হাসি আর হাসা হলো না তাদের। ভেস্তে গেল ভ্যালেন্সিয়ার করা তিনটি গোলও।