কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশের কারাগারগুলোতে বন্দি দেড় শতাধিক জঙ্গি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে কারা কর্তৃপক্ষ রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের এই সদস্যরা নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কারাগারের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। মামলায় হাজিরা দিতে তাদের কারাগারে আনা- নেওয়া এখন রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
গত ২০ নভেম্বর ফিল্মী স্টাইলে জনাকীর্ণ ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের সহযোগীরা। তারা দুজনেই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের নেতা। এ ঘটনা দেশের সকল মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। দেশের ৬৮ জেলার কারাগারে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
দুই জঙ্গি পালানোর আগে চলতি বছরের মাঝামাঝি ভয়ংকর জঙ্গিদের আচরণের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেন কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারের ভেতরে ভয়ংকর এই জঙ্গিরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এক সেল থেকে তারা অন্য সেলে অবাধে যাতায়াত করছে। বিভিন্ন মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে আনা-নেওয়ার সময় তারা চিৎকার চেঁচামেচি করে।
গাড়িতে তোলার সময় বিভিন্ন রকম হাঙ্গামা করে। চলাফেরাতেও উগ্র হয়ে উঠছে। কারা কর্তৃপক্ষ ও কারারক্ষীদের হরহামেশা লাঞ্ছিত করছে তারা। যে কোনো সময় তারা কোনো অঘটন ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। অপরাধ বিশ্লেষকরা জানান, কারাগারে ভয়ংকর জঙ্গিদের বিষয়ে আগাম জানানোর পর কারাগারের জঙ্গিদের আদালতে আনা-নেওয়ার ব্যাপারে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়নি। এর ফলে গত ২০ অক্টোবর দিনে-দুপুরে জনাকীর্ণ ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন আদালত থেকে দুই জঙ্গি পালানোর মতো ঘটনা ঘটেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ পেয়ে সদর দপ্তর থেকে পুলিশের সবকটি ইউনিটকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে দেশের কারাগারে বন্দি জঙ্গিদের যেসব মামলা এখনো তদন্ত শেষ হয়নি তা দ্রুত শেষ করতে বলা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দেশে ৬৮ জেলা কারাগারে ১ হাজার ৮শ’ জঙ্গি বন্দি রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় দেড় শতাধিক জঙ্গি বন্দি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। তাদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কারা কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও গাজীপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে ১৩৭ জন দুর্র্ধষ জঙ্গি বন্দি আছেন। বাকি জঙ্গিরা অন্য কারাগারগুলোতে আছে। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা আছে। আবার কিছু মামলা আদালতে বিচারাধীন।
দিনের পর দিন ধরে তারা কারাগারে আটক থাকায় চলাফেরাতেও উগ্র হয়ে উঠছে। যেসব মামলা বিচারাধীন ও তদন্তাধীন সেগুলো সুরাহা হচ্ছে না। এসব মামলা দ্রুত শেষ করতে সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে একটি নির্দেশনা গেছে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে।
নাম প্রকাশ না করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, কারাগারে বন্দি দুর্র্ধষ জঙ্গিদের নিয়ে কারা কর্মকর্তা, কারারক্ষীদের সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। কারাগারের সেলগুলোতেও তারা সমস্যা সৃষ্টি করে। এক সেল থেকে আরেক সেলে অবাধে যাতায়াত করে। কেউ কিছু বললে তাদের নাজেহাল করে ছাড়ে।
তাদের ধরে নির্দিষ্ট সেলে নিয়ে গেলে চিৎকার চেঁচামেচি করে। অনেক সময় হুমকি দিয়ে থাকে। আদালতে নেওয়া ও আনার সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারা। তারা প্রিজন ভ্যানে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। সম্প্রতি কারাগার কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। কারা কারা এসব করছে তার একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার মূল হোতা জঙ্গি জিয়াউল হক জিয়াকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। কাছাকাছি গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তিনি জানান, গত ৯ বছর ধরেই আনসার আল ইসলামের প্রধান সমন্বয়ক মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হকের নাম শোনা যাচ্ছে। জঙ্গি জিয়ার অবস্থান কি এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা গেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিনিয়তই জঙ্গি মেজর জিয়া তার অবস্থান পরিবর্তন করছেন।
আমরা তার অবস্থান শনাক্ত করছি আবার সে পরিবর্তন করে ফেলছে। তবে আশা করছি, খুব শীঘ্রই তাকে ধরা সম্ভব হবে। তাকে ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ কি না জানতে চাইলে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেসব আধুনিক যন্ত্রপাতি বা কৌশল ব্যবহার করে জঙ্গিরাও সেই জিনিসগুলোকে ধারণ করে। এসব ক্ষেত্রে একটু সময় বেশি লাগে। তবে আমরা জিয়াকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, দেশ থেকে জঙ্গি নির্মূল করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে আসছি। কারাগারে আটক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা হয়েছে সেসব মামলার যাতে দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হয়, সেজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিদের বিষয়ে আমরা সবসময় সতর্ক।
জঙ্গি সংগঠনগুলো যাতে কোনো ধরনের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। আটক জঙ্গিদের বিষয়ে তীক্ষè দৃষ্টি রাখছে কারা কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি এটিইউ, সিটিটিসি, র্যাব ও পুলিশ সব সময় জঙ্গিদের ওপর নজরদারিতে রাখছে। তারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করছে। দ্রুত চার্জশিট দিচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানান, ১৯৯২ সালে আফগান ফেরত মুফতি আবদুর রউফ, মাওলানা আবদুস সালাম আর মুফতি আবদুল হান্নান গঠন করে হরকাতুল জিহাদ হুজি। ১৯৯৯ সালে হুজি কবি শামসুর রাহমানকে হত্যার চেষ্টা চালায়। যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালিয়ে দশজনকে হত্যা করে। হামলা করা হয় রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে। ২০০৪ সালের মে মাসে সিলেটে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর বোমা হামলা চালায় তারা।
হুজির সবচেয়ে বড় হামলা হয় ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়াকে হত্যার পেছনেও ছিল হুজি। তা ছাড়া জেএমবি, জেএমজেবি তৎপরতা ছিল বেপরোয়া। ওই কর্মকর্তা জানান, ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ আবদুর রহমান এবং বাংলাভাই, মুফতি হান্নানসহ জেএমবি ও হুজির সাত নেতাকে ফাঁসি দেওয়া হলেও সংগঠনের তৎপরতা এখনো আছে। বর্তমানে নব্য জেএমবির তৎপরতা আছে। পাশাপাশি আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি), হিযবুত তাহরীর এখনো সক্রিয় আছে। হলি আর্টিজানের হামলার পেছনেও ছিল জঙ্গিরা।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার জানান, ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া দুই জঙ্গি গ্রেফতার না করা পর্যন্ত তাদের নিয়ে ‘ঝুঁকি’ থেকে যায়। পুলিশের এই কর্মকর্তা এ মন্তব্য করে জানান, ঝুঁকি এড়াতে সারাদেশে পুলিশ ইউনিট ও বর্ডার নিয়ন্ত্রণে যারা রয়েছেন তাদের সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যে দুই জঙ্গি পালিয়েছে তাদের ছবি প্রতিটি থানায় পাঠানো হয়েছে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্র জানায়, ‘কাটআউট’ পদ্ধতিতে চলা মোস্টওয়ান্টেড বহিষ্কৃত জিয়ার সঠিক অবস্থান অজানা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার। পরিচয় গোপন করে জামিনপ্রাপ্ত জঙ্গিরা দেশের ভেতরেই অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের বেশিরভাগ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে জঙ্গি তৎপরতা চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আবার কেউ দেশের বাইরেও পালিয়ে গেছে। দেশে ৬৮ কারাগারে কমপক্ষে সাত হাজার জঙ্গির আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ১৯৯৪ সাল থেকে গত বছরের ৩০ আগষ্ট পর্যন্ত জঙ্গি মামলার পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ১৩৫২টি জঙ্গি মামলার মধ্যে পুলিশ অভিযোগপত্র দিয়েছে ১ হাজার ২৬টি। চূড়ান্ত প্রতিবেদন বা ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে ৪৩টির। ২৭৩টি তদন্তাধীন মামলা রয়েছে। যেসব মামলার অভিযোগপত্র হয়েছে সেগুলোতে ৪ হাজার ৬৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এসব আসামির মধ্যে বিচারে ৫১ জনকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। আর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ৫২৮ জনকে। খালাসপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ৫৯৭ জন। গত ২৭ বছরের জঙ্গি মামলাগুলোর মধ্যে সর্বাধিক ২০০৫ সালে ২০১টি মামলা হয়েছে। এরপর সর্বাধিক ১৮৪টি মামলা হয়েছে ২০১৬ সালে। এ ছাড়া ২০১৭ সালে ১২২টি ও ২০১৮ সালে মামলা হয়েছে ১০৩টি।
সারাদেশে জঙ্গিবাদ দমনে সফল পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। এটিইউয়ের পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) মোহাম্মদ আসলাম খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের সব মামলার দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হয়। আমাদের আগে কেউ এত দ্রুত চার্জশিট দিতে পারে না। যাতে করে জঙ্গিদের দ্রুত সাজা হয়ে যায়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান জানান, ২০১৯ সালে এটিইউ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ১১০টি অভিযানে প্রায় ২শ জঙ্গি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এ পর্যন্ত ৬৭টি মামলার মধ্যে ২৭টির চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ৪০টি এখনো তদন্তাধীন। সেগুলোর শীঘ্রই চার্জশিট দেওয়া হবে। বেশ কয়েকটি মামলায় কয়েক জঙ্গির সাজা হয়েছে। তিনি জানান, ২০১৯ সালে ২৭ জন, ২০২০ সালে ৬৩ জন, ২০২১ সালে ৫৬ জন এবং চলতি বছরের ১০ আগষ্ট পর্যন্ত ৩৫ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের অধিকাংশ মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। অনেক মামলার রায়ও হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে গঠিত ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসির প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান জানান, গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের সবার মামলার যত দ্রুত সম্ভব চার্জশিট দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে হলি আর্টিজান হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬১৪ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৯২ মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৬০৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে ৪৪৪ জন জঙ্গির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। সিটিটিসির ইনভেস্টিগেশন, এসএজি ও ইন্টেলিজেন্স বিভাগের এডিসি জাহিদ জানান, এ পর্যন্ত তিনটি মামলার ১৮ জনের মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। ১ জনকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। ৮৫টি তদন্তাধীন মামলা রয়েছে। অচিরেই সেগুলোর চার্জশিট দেওয়া হবে। তিনি জানান, মোস্ট ওয়ান্টেড পলাতক জঙ্গি চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া, মেহেদী হাসান জন, সালাউদ্দিন সালেহীন। তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য একের পর এক অভিযান চলছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত আড়াই হাজার জঙ্গি গ্রেফতার করেছে। শুধু হলি আর্টিজান হামলার পরে এখন পর্যন্ত ১৬শ’র বেশি জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে ৮৬৪ জন জেএমবি সদস্য, ৪০৬ জন আনসার আল ইসলামের সদস্য, আল্লাহর দলের ২০১ জন, হিযবুত তাহরীর ৮৮ জন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৮৬ ও হুজির ৩০ সদস্য রয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশী-বিদেশী ৬৫টি অস্ত্র, ২৫২ রাউন্ড গোলাবারুদ, ১০২টি গ্রেনেড ও ককটেল, ৮০টি ডেটোনেটর ও সাড়ে ১৬ কেজি বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক জব্দ করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় কারাগারে ডির্যাডিকালাইজেশন কর্মসূচি রয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ, র্যাব, সিটিটিসি ও এটিইউ বিভিন্ন সময় ডির্যাডিকালাইজেশনে বিভিন্ন কাজ করে থাকে। নানামুখী অভিযানে জঙ্গিদের সামর্থ্য নষ্ট করা সম্ভব। কিন্তু তাদের আদর্শ থাকে ব্রেনে। কারও ভেতর ভুল মতাদর্শ থাকলে সেটা শক্তি দিয়ে মোকাবিলা করা যাবে না। সেটার জন্য বিভিন্ন ‘মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।