বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের ঘটনা ॥ বিএনপির আড়াইশ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মামলা দায়ের

3

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২০০-২৫০ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু- প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের ব্যানার, বিলবোর্ড, ফেস্টুন ভাঙচুর ও ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে গত মঙ্গলবার রাতে নগরীর কোতোয়ালি থানায় এ মামলা করা হয়। মামলার বাদী মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য জাহিদ সারওয়ার সবুজ। তবে মামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কোনো নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। সবাইকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো: জাকির হোসেন। তিনি বলেন, যারা ভাঙচুর করেছে, তাদেরকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই আমরা।
জানা গেছে, গত রবিবার রাত ৮টার দিকে সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল সিলেট বিমানবন্দর এলাকা থেকে আম্বরখানা বড়বাজার হয়ে গোয়াইটুলার দিকে যাচ্ছিলেন। তার গাড়িকে অনুসরণ করছিল দুটি মোটরসাইকেল। তাতে আরোহী ছিলেন তিনজন। পরে আরেকটি মোটরসাইকেলে থাকা দুই ব্যক্তি বড়বাজার ১১৮নং বাসার সামনে কামালের গাড়ির গতিরোধ করে। পরে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে খুনিরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা কামালকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নিহতের বড় ভাই ময়নুল হক বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ছাত্রলীগ কর্মী আজিজুর রহমান সম্রাটকে প্রধানকে ১০ জনের নামোল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আসামি আছেন আরও ৫/৬ জন। পুলিশ গতকাল রাতে কুটি মিয়া নামের এজাহারনামীয় এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
এদিকে, কামাল খুনের পর গত রবিবার রাতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তারা নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে রিকাবিবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ভাঙচুর করেন ও ছিঁড়ে ফেলেন। এসব ব্যানার-ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিল। সেদিন রাতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলের খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনও পাল্টা মিছিল বের করে। সে মিছিল থেকে বিএনপির ব্যানার, বিলবোর্ড, ফেস্টুন ছিঁড়া হয়।
বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত আওয়ামী লীগের ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ার ঘটনায় পুলিশ গত সোমবার চার ছাত্রদল নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- ইশতিয়াক আহমদ রাজু, বদরুল ইসলাম নজরুল, মিলাদ আহমদ ও রাজীব আহমদ। গত মঙ্গলবার ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
আওয়ামী লীগের মামলা প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সুদীপ দাস বলেন, মামলা রুজু হয়েছে, এখন সেটি তদন্ত করা হবে।
ছাত্রদলের যে ৪ জনকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, তাদেরকে আওয়ামী লীগের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে কিনা, এ প্রসঙ্গে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তদন্তে যদি তাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে, তাহলে গ্রেফতার দেখানো হতে পারে।