কাজিরবাজার ডেস্ক :
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ দেওয়া ৩২ লাখ টাকায় ৬৪ জেলায় হচ্ছে সাহিত্যমেলা। এরই মধ্যে ১৯ জেলায় দুই দিনব্যাপী এ মেলা শেষ হয়েছে। আর একটি জেলায় চলছে। এছাড়া চলতি মাসেই ১৪টি জেলায় মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বাকি ৩০টি জেলায় বাজেট বরাদ্দের কাজ চলছে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২৯তম বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা যায়। কমিটিকে এসব তথ্য জানায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন (রিমি) এমপির সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও কাজী কেরামত আলী বৈঠকে অংশ নেন।
গত অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা পর্যায়ে সাহিত্য চর্চা বাড়ানোর জন্য বাংলা একাডেমিকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমি কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানতে চায় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
জবাবে মন্ত্রণালয় জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৩৪টি জেলায় সাহিত্য মেলার আয়োজন করার জন্য বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে। বৈঠকে বরাদ্দ করা জেলার তালিকা উপস্থাপন করা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন (রিমি) বলেন, বৈঠকে সাহিত্যমেলা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করে মন্ত্রণালয়। আমরা দ্রুত সাহিত্যমেলা শেষ করার জন্য বলেছি। কারণ মানুষের মেধা ও মনন বিকাশে সাহিত্যমেলার বিকল্প নেই।
যেসব জেলায় মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলা একাডেমি এরই মধ্যে গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, বাগরেহাট, পাবনা, নাটোর, জয়পুহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, রংপুর, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, জামালপুর, ঝিনাইদহ, কক্সবাজার, নীলফামারী, ফেনী, মেহেরপুর ও কুড়িগ্রাম জেলায় সাহিত্যমেলা ২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে, মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) থেকে নড়াইলে এ মেলা শুরু হয়েছে।
যেসব জেলায় অক্টোবরে মেলা
বাংলা একাডেমি গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও কক্সবাজার জেলায় সাহিত্যমেলা উপলক্ষে তিনটি স্মরণিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়, অক্টোবরে ১৪টি জেলায় (শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, মাগুরা, হবিগঞ্জ, পটুয়াখালি, বরগুনা, ভোলা, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, পঞ্চগড়, লক্ষ্মীপুর ও মৌলভীবাজার) সাহিত্যমেলা অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীসময়ে বাকি জেলায় সাহিত্যমেলা করার জন্য বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হবে। চলতি বছরের মধ্যে ৬৪টি জেলার সাহিত্যমেলা শেষ করা হবে।
এদিকে, সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট গত এক বছরে কোন কোন রচনাবলী কয়টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তা কমিটিকে জানানো ও বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি গ্রন্থাগারে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শ্রেণিভিত্তিক বই পাঠের প্রতিযোগিতা আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
পূর্বাচলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সংরক্ষিত ৫২ একর ভূমি অধিগ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করায় উক্ত ভূমি হতে ১০ একর ভূমি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নামে বরাদ্দের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অমর সাহিত্য সংকলন ‘নজরুল রচনাবলী’ প্রমিত ইংরেজি ভাষা হতে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদের জন্য অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে মনোনয়নের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া দেশের প্রতিটি উপজেলায় শিল্পকলা একাডেমি চালু ও ডিসেম্বর মাসকে কেন্দ্র করে জেলা পর্যায়ে সপ্তাহব্যাপী উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা আয়োজনের ব্যবস্থার সুপারিশ করে কমিটি।
বৈঠকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, আর্কাইভ ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, প্রত্মতত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালকরাসহ সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।