ওসমানীনগর থেকে সংবাদাদাতা :
সিলেটের ওসমানীনগরে একই পরিবারের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া প্রবাসী পরিবারের ৩ সদস্য মারা যাওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ব্রিটিশ নাগরিক হুসনে আরা বেগম(৪৫) এর লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার পারকুলস্থ জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসায় তার জানাযার নামাজ শেষে স্বামী সন্তানদের পাশে হুসনে আরা বেগমের লাশ দাফন করা হয়। হুসনে আরা বেগমের নামাজে জানাযায় সিলেট ২ আসনের এমপি মোকাব্বির খাঁনসহ স্থানীয় অসংখ্য বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন উপস্থিত হন। এ সময় পরিবারের বেঁচে থাকা একমাত্র সদস্য রফিকুল ইসলামের বড় ছেলে সাদিককুল ইসলামও মায়ের জানাযার নামাজে অংশ নেন। জানাযার নামাজে ইমামতি করেন, মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আব্দুল হাই।
জানাযা নামাজ শেষে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ধিরারাই গ্রামে স্বামী সন্তানদের পাশে হুসনে আরা বেগমের লাশ দাফন করা হয়।
এর আগে, ১৮অক্টোবর দিবাগত রাত ৩টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হুছনে আরা বেগম।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুলাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম পরিবারের ৫ সদস্যদের নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন। ঢাকায় এক সপ্তাহ থেকে বড় ছেলে সাদিকুলের চিকিৎসা শেষে ১৮ জুলাই তাজপুর স্কুল রোডস্থ ৪তলা বাসার দুতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেন। ২৫ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলেদের নিয়ে বাসার একটি কক্ষে রফিকুল এবং অপর দুটি কক্ষে শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী ও শ্যালকের মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ডাকাডাকি করে রফিকুলদের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ‘৯৯৯’ নাম্বারে ফোন দেন রফিকুলের শ্যালক দিলওয়ার। দুপুর ১২টার দিকে ওসমানীনগর থানা পুলিশ দরজা ভেঙ্গে অচেতন অবস্থায় ৫ প্রবাসীকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রফিকুল ইসলাম ও তার ছোট ছেলে মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রী হুসনে আরা, বড় ছেলে সাদিককুল ইসলাম ও একমাত্র মেয়ে সামিরা ইসলামকে হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়। ১১ দিন সজ্ঞাহীন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে থাকা সামিরাও মারা যায়। রফিকুলের স্ত্রী হুসনে আরা ও ছেলে সাদিককুল বাড়ি ফিরলেও ৩ মাস পর হুসনে আরাও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।