সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা ॥ ৩১ অক্টোবর থেকে সিলেটে ৪৮ ঘন্টার পরিবহন কর্মবিরতির ডাক

9
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ও সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল।

স্টাফ রিপোর্টার :
৩১ অক্টোবর থেকে সিলেটে ৪৮ ঘন্টার পরিবহন কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক পিকআপ কার্ভাডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। বৃহত্তর সিলেটের সকল পাথর কোয়ারী সনাতন পদ্ধতিতে খুলে দেওয়ার দাবিতে সোমবার নগরীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উক্ত আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক পিকআপ কার্ভাডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ও সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কার্ভাডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, সিলেটের ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, জাফলং এবং লোভাছড়া পাথর কোয়ারীগুলো থেকে স্বাধীনতা উত্তর কাল থেকে সারা দেশের পাথর সরবরাহ করা হয়ে আসছিল। প্রায় ১৫ লাখ ব্যবসায়ী-শ্রমিক ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক এ পাথর ব্যবসার সাথে জড়িত।
কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে কোয়ারী বন্ধ থাকার কারণে সিলেটের পরিবহন খাত বিশেষ করে ট্রাক মালিক ও শ্রমিকদের ব্যবসায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অধিকাংশ ট্রাক মালিক ব্যাংক ঋণ নিয়ে অথবা কোম্পানীগুলোর কাছ থেকে কিস্তিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে তাদের গাড়ী কিনেছেন। গত ৫ বছর ধরে কোয়ারী বন্ধ থাকার কারণে ট্রাক মালিকদের পণ্য পরিবহনে ভাটা পড়েছে। অনেক মালিক ঋণের কিস্তি দিতে না পেরে ইতোমধ্যে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। অনেকেই ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়ে চরম আর্থিক সংকটে নিপতিত হয়েছেন। প্রায় ৫০ হাজার ট্রাক শ্রমিক পরিবার পরিজন নিয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করছেন। গত ১৬ অক্টোবর সিলেটের পাথর কোয়ারী খুলে দেয়ার দাবিতে আমরা সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও মাননীয় জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
তারা বলেন, পাথর পরিবহন বন্ধ থাকায় শত শত ট্রাক মালিক, স্টোন ক্রাশার মালিক ও ব্যবসায়ী ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় দিন যাপন করছেন। যদিও সনাতন পদ্ধতিতে পাথর কোয়ারী খুলে দেওয়ার জন্য মাননীয় হাইকোর্ট একাধিক বার নির্দেশনা দিয়েছেন। অথচ, পাথর কোয়ারী বন্ধ রেখে বিদেশ থেকে রিজার্ভের ডলার খরচ করে পাথর আমদানী করে উন্নয়ন কাজ চালানো হচ্ছে। ফলে রাষ্ট্রীয় রিজার্ভ সংকটে নিপতিত হয়েছে। লাখো মানুষের জীবন রক্ষা এবং রাষ্ট্রীয় রিজার্ভের ডলার সাশ্রয়ের জন্য সিলেটের পাথর কোয়ারী জরুরী ভিত্তিতে খুলে দেয়া আবশ্যক। তাই আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সিলেটের পাথর কোয়ারী খুলে দেওয়া না হলে ৩১ অক্টোবর থেকে সিলেট জেলায় ৪৮ ঘন্টার ২০২২ ইং থেকে সিলেট জেলা এবং পর্যায়ক্রমে সিলেট বিভাগে সকল প্রকার পণ্য পরিবহন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করা হবে। পরবর্তীতে সিলেট বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট বিভাগীয় ট্রাক পিকআপ কার্ভাডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সচিব মোঃ দিলু মিয়া, সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কার্ভাডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি সভাপতি মোঃ আব্দুস সালাম, সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কার্ভাডভ্যান মালিক সমিতির সহ সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নাজির আহমদ স্বপন, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন তালুকদার, বৃহত্তর পাথর কোয়ারী সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মোঃ আব্দুল জলিল, সদস্য সচিব নুরুল আমীন, জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট ব্যবসায়ী শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ বাবুল বখত, জাফলং ভল্লাঘাট পাথর উত্তোলন ও শ্রমিক বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফুল মিয়া, সহ সভাপতি মোঃ রমজান আলী, সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কার্ভাডভ্যান মালিক সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহরাব আলী, নুর আহমদ খান সাদেক, ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ রাজ্জিক লিটু, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আকমাম আব্দুল্লাহ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জুবেল আহমদ, সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কার্ভাডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ জুলহাস হোসেন বাদল, প্রচার সম্পাদক সামাদ রহমান, দফতর সম্পাদক মোঃ বিলাল আহমদ, নির্বাহী সদস্য আলী আহমদ আলী, আব্দুল মতিন ভিআইপি, সফিক আলী প্রমুখ।