উন্নয়নকাজের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। কি শহরে, কি গ্রামে সর্বত্র প্রায় একই অবস্থা। রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়। দিনের পর দিন ঝুঁকি নিয়ে মানুষ সেই সড়কে চলাচল করে।
খানাখন্দে পড়ে অনেকের হাত-পা ভাঙে। ঠিকাদারের তাতে কিছু আসে যায় না। তদারককারী সংস্থাগুলো বিশেষ কারণে সেসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।
প্রকাশের সংবাদ থেকে জানা যায়, বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার মধ্যে যোগাযোগের প্রধান সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল ছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে আমতলীর মানিকঝুড়ি বাজার থেকে তালতলীর কচুপাত্রা বাজার পর্যন্ত ৮.৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় আট কোটি ৪৩ লাখ টাকা। পাশাপাশি পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কের আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া নদীতে ৬০ মিটার দীর্ঘ একটি গার্ডার সেতু নির্মাণেরও দরপত্র আহ্বান করা হয়। সড়ক ও সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল চলতি বছরের জুন মাসে। কিন্তু পুরো সড়কটি খানাখন্দে ভরে আছে। সড়কের কাজ কবে শেষ হবে, তা কেউই বলতে পারছে না। আর সেতুর নির্মাণকাজ এখনো শুরুই হয়নি। ফলে সড়ক উন্নয়নের কথা শুনে মানুষ যতটা আশান্বিত হয়েছিল, এখন তারা ততটাই হতাশ। অন্যদিকে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের আওতায় রাজীবপুরের ধুলাউড়ি থেকে রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা সালুর মোড় পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে প্রায় দেড় শ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি প্যাকেজে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া কাজ ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ করার কথা ছিল। এর মধ্যে ৯ কিলোমিটার প্যাকেজের কাজ এক বছর আগে শেষ হলেও ২০ কিলোমিটারে বাকি দুটি প্যাকেজের কাজ অর্ধেকও সম্পন্ন হয়নি। সড়কে অসংখ্য গর্ত হয়ে আছে। প্রতিদিন অনেক যানবাহন এসব গর্তে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। বগুড়ার শেরপুর-ধুনট-কাজীপুর আঞ্চলিক সড়ক পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্তকরণের কাজটিও চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। ফলে ব্যস্ত এই সড়কটিতেও মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জনসাধারণের চলাচলের সুবিধা বৃদ্ধি এবং তাদের চলাচলের দুর্ভোগ লাঘবের লক্ষ্যে সড়ক উন্নয়নের এসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এসব উন্নয়নকাজ মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দেয়। এটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। ঠিকাদারদের বাধ্য করতে হবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য। আমরা আশা করি, উল্লিখিত তিনটি সড়কের কাজ দ্রুততর করতে প্রশাসন যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।