সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ প্রতিপক্ষের গুম-খুনের শঙ্কায় গোলাপগঞ্জের আব্দুল কাদির

44
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গোলাপগঞ্জের পশ্চিম ধারাবহর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল কাদির।

স্টাফ রিপোর্টার :
প্রতিপক্ষের অব্যাহত হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ পশ্চিম ধারাবহর গ্রামের মৃত চাঁদ মিয়ার পুত্র মাওলানা আব্দুল কাদির ও তার স্বজনরা। প্রভাবশালী এই চক্রের হুমকিতে এখন গুম-খুনের শঙ্কায় রয়েছেন তিনি ও তার পরিবার।
বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল কাদির এসব অভিযোগ করে জীবনের নিরাপত্তা ও অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রতিবেশি কিছু প্রভাবশালী অন্যায়কারী জুলমকারি চক্রের সাথে ৭ থেকে ৮ বছর আগে আমার বশতবাড়িতে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন নিয়ে বাধা ও হামলার শিকার হই। থানা পুলিশের সহযোগিতায় বৈদ্যুতিক সংযোগ গ্রহণ করি। এই থেকে সূত্রপাত, আজ অব্দি তাদের সাথে বিরোধ চলছে।
আব্দুল কাদির বলেন, এরই জের ধরে প্রতিপক্ষ লোকজন আমাকে আমার বশতবাড়ি থেকে বিতাড়িত করতে নানাভাবে নির্যাতনসহ আমাকে এবং আমার পরিবারকে প্রতিনিয়ত হুমকি ধমকি দিচ্ছে। রাতের আঁধারে হামলা করে আমাকে ও আমার খালাত ভাই আব্দুল কাইয়ূমকে আহত করেছে।
হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ১৮ জুলাই গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ বাজারে আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মা এসএস ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ বন্ধ করে আমার ভাই সাইফুল ইসলাম ও খালাতো ভাই আব্দুল কায়ুমকে নিয়ে পশ্চিম ধারাবহনস্থ আমার গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলাম। প্রাইভেটকার দিয়ে ফেরার সময় গাড়িটি কাদায় আটকা পড়ে। পরে, গাড়িটি উদ্ধার করে একই এলাকার আমার পুরাতন বাড়িতে রেখে পায়ে হেঁটে বর্তমান বাড়িতে রওয়ানা হই। রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিপক্ষ পূর্ববারকোট গ্রামের ইয়াকুব আহমদের বাড়ির সামনে যাওয়া মাত্র ওৎপেতে থাকা ইয়াকুব আহমদ, বিলাল আহমদ, জুবায়ের আহমদ ও কবির আহমদসহ অজ্ঞাত কয়েক জন অতর্কিত হামলা চালায়। তারা আমার খালাত ভাই কাইয়ুমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আমিও হামলার শিকার হই।
এ ঘটনায় গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন মাওলানা আব্দুল কাদির। মামলায় ২ নম্বর আসামি বিলাল আহমদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে, জামিনে তিনি মুক্ত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা কাদির আরও অভিযোগ করেন, মামলা দায়েরের পর আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। অন্যথায়, পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা কিংবা গুম-খুনের ঘটনা ঘটাতে পারে।
তিনি বলেন, তাদের ভয়ে আমি অনেকটা বাড়ি ছাড়া অবস্থায় আছি। যে কোনো সময় আমার বা আমার পরিবারের লোকজনদের উপর হামলা করতে পারে এমন আশংকায় আতংকের মধ্যে দিন কাটে প্রতিনিয়ত।
মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তার। কাদির বলেন, তারা দা, লাটি নিয়ে পাহারা দেয় আমি কখন বাড়ি থেকে বের হই কিংবা বাড়িতে আসি। এসব বিষয় আমি মৌখিকভাবেভাবে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবগত করেছি। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অন্যদিকে, এ ঘটনার একমাস পরপ্রতিপক্ষের লোকজন আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এটি মূলত হয়রানিমূলক এবং আগের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে বলে মনে করেন তিনি। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ মামলা থেকে তিনি ও পরিরবারের লোকদের হয়রানি থেকে মুক্তি দাবি করেছেন মাওলানা আব্দুল কাদির।
মামলা প্রত্যাহারে অব্যাহত হুমকি দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মামলার ২ নম্বর আসামি বিলাল আহমদ গত ২৭ জুলাই জামিনে বেরিয়ে আসে। এই দিন সে আমাকে সামনে পেয়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেয়। অন্যথায়, আমার ভাই-বোনদের স্কুল-মাদরাসায় যাওয়ার পথে বা বাজারে যাওয়ার পথে তুলে নিয়ে খুন করে লাশ গুম করবে।
এ অবস্থায় চরম আতংকের মধ্যে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কোন বিকল্প চলার রাস্তা না থাকার ফলে সংঘবদ্ধ চক্র ও আমার মামলার আসামির বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়েই চলতে হয়। খুনের আতংক নিয়েই আমরা চলাফিরা করছি। খালাতো ভাই আব্দুল কায়ুম আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় তার জীবন নিয়েও শঙ্কাবোধ করছি।
তাই, নিজের ও পরিবারের লোকজনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনি আইজিপি, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।