কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের সফলতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সক্ষমতা দেখিয়েছে এবং তা সত্যিই বিস্ময়কর।
এ মহামারির ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘গ্লোবাল কোভিড অ্যাকশন প্ল্যান’ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে নিজ দেশের আগ্রহের কথা জানান পিটার।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় এ আহ্বান জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
জাহিদ জানান, ভবিষ্যতে কীভাবে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সাইড লাইনে মন্ত্রী পর্যায়ে একটি আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্র থেকেও বাংলাদেশ এগিয়ে আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন প্রদান করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
পিটার হাসকে নিজ কার্যালয়ের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য বিভিন্ন কমিটি করে দেওয়ার ব্যাপারে জানান প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তিনি নিজে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও মনিটরিং করার কথা উল্লেখ করেন সরকার প্রধান।
এ সময় বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে বিনামূল্যে তিন ডোজ টিকা দিয়েছে। এখন শিশুদেরও টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বলেন, শুরু থেকেই এ ব্যাপারে আমার দল, সহযোগী সংগঠনের সদস্যরা দিনরাত মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি, রোগীদের সেবা, ওষুধপত্র বিতরণ, অক্সিজেন সরবরাহসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সুন্দরভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে।
করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও এটিকে কেন্দ্র করে যে পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা, তাতে সারা বিশ্বের মানুষের ভোগান্তি পোহাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মানুষও ভোগান্তিতে আছে। আওয়ামী লীগ সরকার সাধ্যমতো মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার প্রশংসা করেন পিটার হাস। তিনি আশা করেন, বাংলাদেশ আরও উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে।
তার এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ের পর থেকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এবং দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার সকল সম্প্রদায়, শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবনমান পরিবর্তনে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তার ফলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কথা স্মরণ করেন সরকার প্রধান আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরেই তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন ব্যাহত হয় বলেও পিটারকে জানান শেখ হাসিনা।
বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের সক্ষমতার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার সব মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, সরকার দেশের তৃণমূল মানুষের জীবনমান পরিবর্তনে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে জমিসহ ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। কেউ পিছিয়ে থাকবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাক্ষাতের সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।