কাজিরবাজার ডেস্ক :
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরেকটি বড় নিয়োগ আসছে। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরে ৬০ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ স্কুল পর্যায়ে, বাকি ২০ শতাংশ কলেজ পর্যায়ে শূন্য পদ রয়েছে। এরই মধ্যে সারাদেশ থেকে সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শূন্যপদের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে আগামী মাসের শেষ দিকে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রার্থীদের কাছে অনলাইনে আবেদন চাওয়া হবে বলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) থেকে জানা গেছে।
এনটিআরসিএ থেকে জানা গেছে, চতুর্থ ধাপে শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত ২৬ জুন থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শূন্যপদের তালিকা পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা অনলাইনে চাহিদা তৈরি করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠান। সেটি উপজেলা থেকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে এনটিআরসিএতে পাঠানো হয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর তালিকা পাঠানোর শেষ সময় ছিল।
সারাদেশ থেকে পাওয়া ৬০ হাজারের বেশি শূন্য পদের যাচাই-বাছাই শেষে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন চাওয়া হবে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়া গেলে আগামী অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আবেদনকারীদের মধ্যে মেধাতালিকায় যোগ্য প্রার্থীদের মোবাইল ফোনে এসএমএস দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, স্কুল ও স্কুল-২ (জুনিয়র মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, ইবতেদায়ি ও কারিগরি) ও কলেজ ধাপে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি আর কলেজ পর্যায়ে ২০ হাজারের মতো শূন্যপদের তালিকা পাওয়া গেছে। তালিকা পাওয়া সব পদ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত কি না তা যাচাই করতে জেনারেল স্কুলের তালিকা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে, কারিগরি প্রতিষ্ঠানের তালিকা কারিগরি অধিদপ্তরে আর মাদরাসার তালিকা মাদরাসা অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। সেখান থেকে চূড়ান্ত করে পাঠানোর পর এনটিআরসিএ থেকে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিবন্ধিত প্রার্থীদের কাছে নিয়োগের জন্য অনলাইন আবেদন চাওয়া হবে। শিক্ষকরা পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিষয়ভিত্তিক আবেদন করতে পারবেন।
জানতে চাইলে এনসিটিবি’র সচিব মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, শিক্ষক নিয়োগের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে সেসব তালিকা যাচাই-বাছাই করতে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। আগের মতো তালিকায় যেন ভুলভ্রান্তির সংখ্যা কমে যায় সে কারণে এবার এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এবার সব এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের তালিকা আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হবে। বর্তমানে এমপিও প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কিছুদিন আগে ননএমপিও প্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়া হবে। সেসব শিক্ষকের প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে বেতন পরিশোধ করার শর্তে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে।
তিনি বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হতে পারে। আগের মতো আর প্রার্থীরা যাতে শতাধিক আবেদন না করতে পারে বা আবেদনের ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়তে না হয় সেটিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এবার একজন প্রার্থী একটি আবেদনের মাধ্যমে ৫ থেকে ১০টি পচ্ছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে পারবেন। একাধিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের জন্য তাকে আলাদা আলাদা আবেদন করতে হবে না। এ প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন দেওয়া হলে সেটি কার্যকর করা হবে।
শিক্ষক নিয়োগের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে সেসব তালিকা যাচাই-বাছাই করতে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। তালিকায় যেন ভুলভ্রান্তির সংখ্যা কমে যায় সে কারণে এবার এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। সব এমপিওভুক্তি ও নন-এমপিওভুক্তি প্রতিষ্ঠানের তালিকা আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হবে। বর্তমানে এমপিও প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কিছুদিন আগে ননএমপিও প্রতিষ্ঠানের তালিকাও চাওয়া হবে।
জানা গেছে, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য এনসিআরসিএ’র নিবন্ধিত প্রার্থীদের মধ্যে ৩৫ বছরের কম বয়সীরা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এ পর্যন্ত এনটিআরসি’র ১ থেকে ১৬তম নিবন্ধন পরীক্ষার মাধ্যমে ৬ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৯ জন নিবন্ধিত প্রার্থী রয়েছেন। তার মধ্যে এ পর্যন্ত ৮০ হাজারের বেশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছেন। বর্তমানে ৩৫ বছরের নিচে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৩৫৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। তারা চতুর্থ ধাপে আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান বলেন, তালিকা সংগ্রহ, যাচাই-বাছাই ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। আমরা নির্ভুল তালিকা প্রকাশ ও সুপারিশ করার চেষ্টা করছি। আগের চাইতে এবার ভুলভ্রান্তির সংখ্যা অনেক কমে যাবে। তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে ভুল চাহিদা ও টেকনিক্যাল কারণে নিয়োগ পায়নি এমন দেড় হাজার আবেদন এসেছে। আমরা প্রতিষ্ঠান ও প্রার্থীদের সঙ্গে আলাদা সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ভুলের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। প্রতিষ্ঠান বা টেকনিক্যাল ভুলের কারণে যারা নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বা ননএমপিও প্রতিষ্ঠানে এমপিও বলে চাহিদা দেওয়া হয়েছে প্রমাণিত হলে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। চতুর্থ ধাপের শূন্য আসনে তাদের পচ্ছন্দের প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া হবে। এজন্য নতুন করে আবেদন করতে হবে না।
তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে পাওয়া ৬০ হাজারের বেশি শূন্যপদের যাচাই-বাছাই শেষে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন চাওয়া হবে। অনুমোদন পাওয়া গেলে আগামী অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আবেদনকারীদের মধ্যে মেধাতালিকায় যোগ্য প্রার্থীদের মোবাইল ফোনে এসএমএস দেওয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানের জন্য তাকে ১৫ থেকে ২০ দিনের সময় দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে তিনি যোগদান না করলে সে পদের জন্য দ্বিতীয় মেধাতালিকায় থাকা প্রার্থী যোগদানের সুযোগ পাবেন। এটি এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।