কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ভেবেছিলাম প্রধানমন্ত্রী এবার ভারতে গেছেন তিস্তা পানিবন্টন চুক্তির সমাধান হবে, অভিন্ন নদীর পানির হিস্যা পাব। সীমান্তে হত্যা বন্ধ হবে, আমাদের যে বাণিজ্যে ব্যবধান আছে তা কমে আসবে। আরও সুযোগ-সুবিধা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নিয়ে আসতে পারবেন। তিনিও যে আশা নিয়ে গিয়েছিলেন ভারত সেগুলো দিয়ে দেবে। ভারত তো এখন তাদের (আওয়ামী লীগ সরকার) ওপর খুশি নয়।’
বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে ভারত সহায়তা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, অবশ্যই ভারতের সঙ্গেও বন্ধুত্ব চাই। আমরা মনে করি, ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। আশা করি, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল যে ভারত, তারা অবশ্যই এদেশের মানুষের যে গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, যে লড়াই তাতেও সহযোগিতা করবে।’
শনিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মতিঝিল-পল্টন-শাহজাহানপুর থানার যৌথ উদ্যোগে ‘নজিরবিহীন বিদ্যুৎ লোডশেডিং, জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপণ্য মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নিহত নুরে আলম, আব্দুর রহিম, শাওনের মৃত্যু ও গণতন্ত্রের মাতা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে’ এই সমাবেশ হয়।
একই দাবিতে ঢাকা মহানগরীর (উত্তর ও দক্ষিণ) ১৬টি স্থানে ধারাবাহিক সমাবেশ করবে বিএনপি। শনিবার সমাবেশের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সমাবেশ ছাড়াও আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে মৌন অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এই কর্মসূচি সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। রোববার বিকালে উত্তরাতে সমাবেশ হবে।
তিনি বলেন, ‘একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের ভালোবাসা না নিয়ে, এদেশের মানুষের সমর্থন না নিয়ে এখানে কেউ কখনো কিছু করতে পারবে না। তাই আজকে যে ভয়াবহ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তাদের সরাতে হলে আমাদেরকে ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সব জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে এই অবৈধ সরকারকে সরিয়ে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
‘বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের গুলি করার ঘটনাকে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে তুলনা’ করে ‘সরকারের এহেন কর্মকাণ্ড এবং দেশের আর্থিক খাতে ক্ষমতাসীনদের খাশ লোকদের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের ঘটনার’ কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের সব টাকা দুর্নীতিবাজরা লুট করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এখন ব্যাংকে টাকা নেই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন থেমে নেই। গত মাস থেকে যে আন্দোলন শুরু করেছি তা চলছে। এই আন্দোলন চলতেই থাকবে। ঢাকা মহানগরীর ১৬ স্পটে বা জোনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ করব। এরপর আরও বৃহত্তর কর্মসূচি দেশজুড়ে আমরা দেব। আসুন, আমরা এই কর্মসূচিতে শরিক হই এবং একযোগে আওয়াজ তুলি- ফায়সালা হবে কোন পথে, রাজপথে রাজপথে। টেক ব্যাক, টেক ব্যাক, বাংলাদেশ বাংলাদেশ।’
মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর রশীদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক এসকে সিকদার কাদিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসসহ শাহবাগ-পল্টন-মতিঝিল থানা মহানগরের নেতারা বক্তব্য দেন।