স্টাফ রিপোর্টার :
এসএমপি ট্রাফিক বিভাগ গত আগষ্ট মাসে অভিযান চালিয়ে ২ কোটি ৩১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরমধ্যে ১ কোটি ২২ লাখ ৯৩ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এসব জরিমানা ৫ হাজার ১৬৫টি যানবাহনের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। সেই সাথে ৩ হাজার ৩৭১ টি যানবাহন আটক করা হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেলে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ও পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত বিএম আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত আগষ্ট মাসের ১ তারিখ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত মহানগরীতে রেজিস্ট্রেশনবিহীন যানবাহন, ট্রিপল রাইডিং, হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালানো, গাড়িতে কালো গ্লাস পেপার লাগানো, যানবাহনে ওভার লোডিং, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো, হাইড্রোলিক হর্ণের ব্যবহারসহ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ পরিপন্থী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে গত আগস্ট মাসে ব্যাপক অভিযান চালায় এসএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ।
অভিযানকালে নগরীর এয়ারপোর্ট রোডে, হুমায়ুন চত্বর, মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড, তেমুখী এলাকায় প্রতিদিন চেকপোস্টের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন আইন জোরালোভাবে প্রয়োগ করা হয়। গত বছরের আগস্ট মাসের তুলনায় এ বছর আগস্ট মাসে ১ হাজার ৫৫১টি মামলা বেশি রুজু করা হয়েছে এবং ১ হাজার ৮৩টি যানবাহন বেশি আটক করা হয়েছে।
এছাড়াও রুজুকৃত জরিমানার পরিমাণ গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি করা হয়েছে এবং আদায় করা হয়েছে। গত আগস্ট মাসে ৫ হাজার ১৬৫টি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং ৩ হাজার ৩৭১টি যানবাহন আটক করা হয়েছে। এসব যানবাহনে ২ কোটি ৩১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরমধ্যে ১ কোটি ২২ লাখ ৯৩ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এসএমপি মিডিয়া শাখা আরও জানায়, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর রুজুকৃত ধারা সমূহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ৯২(১) ও ৯২(২) ধারায় মোট ২ হাজার ২৩২টি মামলা রুজু হয় যা মোট মামলার প্রায় ৪০% অর্থাৎ হেলমেট ব্যবহার না করা, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন এবং উল্টোপথে মোটরযান চালানো চালকের সংখ্যাই বেশি।
এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন, ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন, রেজিস্ট্রেশন বিহীন ১২৫টি সহ মোট ১২৬১টি সিএনজিতে প্রসিকিউশন দাখিল করা হয়। ৫৬৯ টি প্রাইভেট কার, ১৬৩ টি মাইক্রোবাস, ১৯ টি ট্রাক, ৫ টি বাস, ৮২ টি লেগুনা-পিকআপ এবং ১৫টি টেম্পুতে প্রসিকিউশন দাখিল করা হয় তন্মধ্যে ২৩৪ টি যানবাহনে অনুমোদনহীন কালো গ্লাস পেপারের জন্য সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৮৪ ধারায় প্রসিকিউশন দাখিল করা হয়। নিয়মিত মামলার পাশাপাশি ১ হাজার ৭৩২টি কাউন্টার মামলা দাখিল করা হয়। সড়ক পরিবহন আইন’২০১৮ ধারা (৭২) মূলে রেজিস্ট্রেশন না থাকায় ১০৫টি এবং ধারা (৬৬) মূলে ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় ৮৫২টি প্রসিকিউশন দাখিল করা হয়, যা মোট মামলার প্রায় ১৭%।
মামলা রুজুর পাশাপাশি প্রায় ৩ হাজার ৪০০টি যানবাহন আটক করে ডাম্পিং ইয়ার্ডে প্রেরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে মোটরসাইকেল ১ হাজার ৯৪৮ টি, সিএনজি ৩১৮টি, টমটম ৭৭টি, ব্যাটারি চালিত রিক্সা ৭৯৪টি ও ব্যক্তিগত যানবাহন (প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ) ২২৭টি। এছাড়াও গত ১৪ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট তারিখ পর্যন্ত মহানগরীর কুমারগাঁও বাস স্ট্যান্ড, কোম্পানীগঞ্জ বাইপাস, হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বর ও আম্বরখানা পয়েন্টে চেকপোস্ট ডিউটির মাধ্যমে ৯৪১টি প্রসিকিউশন ও ৭৫৮টি যানবাহন ডাম্পিং এর মাধ্যমে পুলিশ লাইন্সে প্রেরণ করা হয়। সার্জেন্ট ও টিএসআইদের মধ্যে টিএসআই/৯৪ শাহীনুর কবির সর্বোচ্চ ২৯৬টি মামলা রুজু করেন এবং সার্জেন্ট সঞ্জয় বিশ্বাস সর্বোচ্চ ২৯৯টি যানবাহন আটক করেন।
মামলা এবং আটকের পাশাপাশি এসএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ প্রতি মঙ্গলবার যানবাহন চালক, মালিক, শ্রমিক ও পথচারীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা ও ট্রাফিক আইন সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করে।
এছাড়াও স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ট্রাফিক এডুকেশন নেটওয়ার্ক (টেন) এর কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তন্মধ্যে স্কলার্স হোম স্কুল এন্ড কলেজ, পাঠানটুলা, আম্বরখানা গার্লস স্কুল, জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, পাইলট স্কুল, রাজা জিসি হাইস্কুলে আগস্ট মাসে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।