আমরা কথায় কথায় শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নের কথা বলি। কিন্তু কঠোর বাস্তবতাগুলো কতটা বিবেচনায় নিচ্ছি? প্রায়ই পত্রপত্রিকায় খবর হয়, স্কুলের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, পলেস্তারা খসে পড়ে শিক্ষার্থী আহত হয়, খোলা আকাশের নিচে বসে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয়। ঠিক এ ধরনেরই একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রাবাসে থাকতে হচ্ছে মাদারীপুর সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থীদের।
চারতলা ভবনের বেশির ভাগ জায়গায় দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। কোনো কোনো কক্ষের একটি অংশের ছাদ ভেঙে বের হয়ে আছে রড। পিলারের ঢালাই খুলে গিয়ে রড বের হয়ে আছে। ছাদের পলেস্তারা খুলে বের হয়ে এসেছে রড। বাথরুমের পাইপ বেয়ে পড়ছে নোংরা পানি। আবার ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। এমন অবস্থায় সেখানে বিদ্যাচর্চার পরিবেশ কতটুকু থাকে, তা সহজেই অনুমান করা যায়।
মাদারীপুর সরকারি কলেজের এই স্থাপনাটি ১৯৮৫ সালে তৈরি। স্বাভাবিকভাবেই এই পুরনো স্থাপনাটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। চলতি বছরের ২৬ মে ভবনটিকে মেরামত অযোগ্যের ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। পরে সতর্কতা বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে ছাত্রাবাসটিতে আবাসিক ছাত্রদের সংখ্যা ও চলাচল সীমিত করার জন্য বলা হয়। নিচতলায় দেয়ালে ঝুলানো লাল ব্যানারে ‘সতর্কবার্তা’য় লেখা আছে, মাদারীপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে এই ছাত্রাবাস ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ এই ভবনেই ২০০ শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। তাদের আর কোনো উপায়ও নেই। বাইরে অনেক খরচ, এত খরচ তাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। ছাত্ররা পুরনো ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।
শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষার্থীদের জন্য এর সুযোগ বাড়াতে হবে, শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং ক্রমান্বয়ে মানোন্নয়নের চেষ্টা করতে হবে। দ্রুত মাদারীপুর সরকারি কলেজের ছাত্রাবাসটির সংস্কার করা হোক। নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হোক। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।