কাজিরবাজার ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন নেওয়ার জন্য আরও দু’মাস আবেদনের সময় বাড়াল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বুধবার (২৪ আগষ্ট) এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২৯ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সময় ছিল। তবে দুই মাস বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আগামী ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।
এ সিদ্ধান্ত জানানোর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইনে প্রতি সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়ার জন্য আবেদন আহ্বান করার বিধান রয়েছে। সে মোতাবেক গত ২৬ মে দলগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান করে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি।
জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ১০টির মতো দল আবেদনপত্র তুলেছে। এদের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিয়েছে দু’টি দল। এদের একটি হলো বাংলাদেশ ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি, অন্যটির নাম বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ।
সর্বশেষ দল নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। সময় দেওয়া হয়েছিল ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল ৭৬টি রাজনৈতিক দল। কে এম নূরুল হুদা কমিশন নানা কারণে সবার আবেদন বাতিল করেছিল। পরবর্তীতে আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রীক আন্দোলন (এনডিএম) ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।
তার পাঁচ বছর আগে ২০১৩ সালে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করলে ৪৩টি দল আবেদন করেছিল। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন সে সময় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, এই দু’টি দলকে নিবন্ধন দেয়।
এক এগার সরকারের সময় ড. এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো দলগুলোকে নিবন্ধন দেয়। সে সময় ১১৭টি দল আবেদন করেছিল। যাচাই- বাছাইয়ে পর নিবন্ধন পায় ৩৯টি দল। সবমিলিয়ে গত ১৪ বছরে মোট ৪৪টি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিলও করা হয়। ফলে বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৩৯টি।
বর্তমানে নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), গণতন্ত্রী পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি), বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল (জাসদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল (জেএসডি), জাকের পার্টি, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রীক দল (বাসদ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রীক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।
এ পর্যন্ত যে পাঁচ দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে, সেগুলো হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, ফ্রিডম পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রীক পার্টি (পিডিপি) ও জাতীয় গণতান্ত্রীক পার্টি (জাগপা)।