দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) ও দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র পক্ষ থেকে ২৬ সদস্য বিশিষ্ট এক প্রতিনিধিদল ২৮ জুলাই ২০২২ইং ভারতের আসামের গোয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত ২য় নর্থ-ইস্ট ইন্ডিয়া বায়ার-সেলার মিট-এ যোগদান করেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক ব্যবসায়ীক সম্পর্ক জোরদারকরণের লক্ষ্যে ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, আসাম সরকার ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতায় সম্মেলনটি আয়োজন করেছে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং গেস্ট অফ অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ড. রাজকুমার রঞ্জন সিং। সম্মেলনে কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, হস্তশিল্প, খনিজ সম্পদ, পণ্য উৎপাদন এবং আমদানি-রপ্তানি বিষয়ে প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন। এফবিসিসিআই এর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন প্রতিনিধিদলের প্রধান ও এফবিসিসিআই এর সহ সভাপতি মোঃ আমিন হেলালী।
সভায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন এবং আমদানী-রপ্তানীর ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যাবলীসহ সিলেট চেম্বারের প্রস্তাবনা সমূহ সমাধানের আশ্বাস দেন।
সম্মেলনে সিলেট চেম্বারের সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক জনাব তাহমিন আহমদ বলেন, ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের বিশাল বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করণের লক্ষে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, আমদানী রপ্তানীর ক্ষেত্রে বর্তমানে অনেক বাধা রয়েছে। এই বাধাগুলো দুরীকরণ করা আবশ্যক। সভায় সভাপতি মহোদয় সিলেটের সাথে আমদানী-রপ্তানীর বিদ্যমান সমস্যা সমূহের প্রস্তাবনা সভার প্রধান অতিথি আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মার হাতে তোলে দেন।
প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয় যে, বর্তমানে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রচুর পণ্য রপ্তানি হয়। কিন্তু অনেক সময় কোন নোটিশ ছাড়াই ভারতীয় বর্ডার বন্ধ করে দেওয়া হয়, যার ফলে বাংলাদেশী আমদানিকারকগণ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হন। প্রস্তাবনায় বাংলাদেশী আমদানিকারকদের ক্ষতি থেকে বাঁচাতে আগাম নোটিশ ব্যতিরেকে বর্ডার বন্ধ না করার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানান। এছাড়াও দুই দেশের বাণিজ্য সহজীকরণ ও রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারতের বর্ডার সংলগ্ন স্থানে রপ্তানি পণ্যের সার্টিফিকেটিং এজেন্সী স্থাপনের অনুরোধ জানান অথবা বিএসটিআই এর সার্টিফিকেট গ্রহণের আহবান জানান। প্রস্তাবনায় বাংলাদেশ ও আসাম রাজ্যের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার লক্ষে নদীপথে লাইটার জাহাজ চালানো, বাংলাদেশের আমদানিকারকগণ কর্তৃক নিজস্ব স্থানে কয়লা ও পাথর ডাম্পিং এ বিএসএফ কর্তৃক বাঁধা প্রদান না করা, সিলেটের সাথে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে গোয়াহাটি-শিলচর-করিমগঞ্জ-সুতারকান্দি রুটে বাস সার্ভিস চালু, ভোলাগঞ্জ ও ছাতকের যাদুকাটা নদী রুটের বিপরীতে ভারতীয় অংশে ইমিগ্রেশন চালুর অনুরোধ জানান। সম্মেলনে ভারত, বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, লাওস ও ভুটানের আমদানি-রপ্তানিকারক ও সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ যোগদান করেন।
উল্লেখ্য যে, উক্ত বায়ার-সেলার মিটে কৃষি পণ্য যেমন জ্যাম, জেলি, হ্যান্ডিক্রাফট, এসএমই পন্যসহ বিভিন্ন স্থানীয় উৎপাদনশীল পণ্যের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বায়ার-সেলাররা বিটুবি মিটিং এর মাধ্যমে উক্ত পন্য সমূহ প্রদর্শণপূর্বক পন্যের গুণগত মান দেখে আমদানী-রপ্তানীর সুবর্ণ সুযোগ গ্রহণ করেন।
এফবিসিসিআই এর সহ সভাপতি মোঃ আমিন হেলালীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে রয়েছেন এফবিসিসিআই এর পরিচালক আবু মোতালেব, সাবেক পরিচালক খন্দকার রুহুল আমিন, বাংলাদেশ মোবাইল ফোন বিজনেসম্যান এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিতু, এফবিসিসিআই এর প্রতিনিধি মোঃ নিয়াজ আলী চিশতি, মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন রাজিব, মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, মোহাম্মদ সেলিম, সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান, মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, সিলেট চেম্বারের সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক তাহমিন আহমদ, সহ সভাপতি মোঃ আতিক হোসেন, পরিচালক ও এফবিসিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক মোঃ হিজকিল গুলজার, সিলেট চেম্বারের পরিচালক মুশফিক জায়গীরদার, মুজিবুর রহমান মিন্টু, সরোয়ার হোসেন ছেদু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ মামুন কিবরিয়া সুমন, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, সদস্য মোঃ জাকির হোসেন প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি
