জ্ঞানপাপীদের কথা শুনে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না – প্রধানমন্ত্রী

5
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তন প্রান্তে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
জ্ঞানপাপীদের কথা শুনে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়, সেদিকে সজাগ ও সচেতন থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘ষড়ঋতুর দেশ আমাদের। দুইমাস পর পর ঋতু বদলায়, মানুষের মনও বদলায় এবং ভুলেও যায়। কাজেই দুইমাস পর ভুলে যেন না যায়, সেজন্য আমরা কী কাজ করেছি, তা মানুষের কাছে বার বার বলতে হবে, বোঝাতে হবে। কারণ একটা শ্রেণি আছে, যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। এ জ্ঞানপাপীদের কথা শুনে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়।’
বুধবার (২৭ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
দলীয় নেতাকর্মীদের সরকারের উন্নয়ন দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রগতি ব্যাহত করার অনেক ষড়যন্ত্র আছে, চক্রান্ত চলছে। আমি বিশ্বাস করি, যত চক্রান্তই করুক বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। আমরা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য এ গতিকে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঝড়-ঝাপটা এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশের কারণে অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হবে। আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে যেমন চলি, তেমনি বৈশ্বিক যে দুর্যোগ সেটাও মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে পারবো। সেই বিশ্বাসও আমার আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগকে এটাই বলবো, তোমাদের কাজ হবে আমরা যে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, তা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা। যে উন্নতি দেশের হয়েছে, শিক্ষার দ্বার অবারিত হয়েছে, বহুমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি, কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি, সেই সঙ্গে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি, গ্রামে গ্রামে ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় মানুষের ঘরে বসে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, ফ্রিল্যান্সার তৈরি হচ্ছে। বেকারদের ব্যাপক কর্মসংস্থান হয়েছে, রাস্তাঘাট, সেতু-পুল নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছি, এ উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রত্যেকটি অঞ্চলে গিয়ে মানুষের কাছে বার বার বলতে হবে। কে কি বললো সেদিকে কর্ণপাত করার কোনো দরকার নেই। আমরা কী করেছি, তা মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারলে সেটাই হবে আসল জবাব।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘কে কী বললো সেদিকে না গিয়ে আমরা মানুষের জন্য যে উন্নয়ন করেছি, সেই উন্নয়নের কথাগুলো একেবারে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। বার বার বলতে হবে। এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে এবং এই কাজটা করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগ যেভাবে মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে, সেভাবেই কাজ করে যাবে বলে আশা করি। সংগঠনকে সুসংগঠিত করে শক্তিশালী করার পাশাপাশি দুঃসময়ে যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তা অব্যাহত রাখবে। একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন হিসেবে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে আর্তমানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখবে এবং নিবেদিতপ্রাণ হয়েই রাজনীতি করবে।’
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের গত এক বছরের কর্মকাণ্ড এবং সদ্য প্রয়াত দলটির সাবেক সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের ওপর দুটি পৃথক ভিডিওচিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বেচ্ছাসেবার এক বছর’ শীর্ষক একটি প্রকাশনার মোড়কও উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।