স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বাবুলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে তার সাবেক স্ত্রী জাহেদা আক্তার শান্তার মা ঝর্ণা বেগম অভিযোগ করেছেন, শান্তা নিজের উশৃঙ্খল জীবনযাপন ও অর্থ-লোভের কারণে বাবুলের সঙ্গে দীর্ঘ ১২ বছরের সংসার ধরে রাখতে পারেননি। সম্প্রতি বাবুল তাকে তালাক দিয়েছেন। এখন আমার মেয়ে বাবুলের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবের আমিনূর রশীদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকার খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া এলাকার বাসিন্দা ঝর্ণা বেগম।
তিনি বলেন, বিবেকের তাড়না থেকে ঢাকা থেকে ছুটে এসেছি। একজন নিরপরাধ ও সজ্জন ব্যক্তি মো. নজরুল ইসলাম বাবুলের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আমার মেয়ে যে সব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন তা সবই মিথ্যা। সব জেনেও চুপ করে থাকাটাকে কোনোভাবেই সমীচীন মনে করছি না। আমার সঙ্গে শান্তার ছেলেও আছে। মায়ের তৈরি অশান্তির আগুনে তার জীবনও অনেকটাই এলোমেলো হয়ে পড়েছে।
ঝর্ণা বেগম বলেন, মো. নজরুল ইসলাম বাবুল ও শান্তার ১২ বছরের সংসার সুখে-শান্তিতে ভরপুর ছিল। তা ধরে রাখতে পারেননি শান্তা। নজরুল ইসলাম বাবুল সম্প্রতি তাকে তালাক দিয়েছেন। উচ্চাভিলাষী মানসিকতা ও উচ্ছৃঙ্খল স্বভাবের কারণে অনেক আগে থেকেই শান্তা আমাদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, পরিবারের বন্ধনের চেয়ে অর্থ-সম্পত্তির লোভই আমার মেয়েকে গ্রাস করেছে। প্রাচুর্য; এমনকি মাদকের নেশাতেও তার পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে বলে জেনেছি। প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েও সমাজে নিজের অবস্থান ও লোকলজ্জার ভয়ে নজরুল ইসলাম বাবুল নিজের দুঃখ কারও কাছে প্রকাশ করেননি। এত অশান্তির পরও দুঃখ-কষ্ট বুকে চেপেই তিনি সংসার চালিয়ে গেছেন। পরিবারে অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছায় তিনি শান্তাকে তালাক দেন। তবুও শান্তি পাননি বাবুল। শান্তা তাকে ফোনে নানাভাবে হুমকি প্রদান করতে থাকে। বাধ্য হয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করেন। এরপরও শান্তা থেমে থাকেননি, নির্যাতনের মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
বাবুল শান্তাকে স্ত্রী হিসেবে যথেষ্ট সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন জানিয়ে ঝর্ণা বেগম বলেন, শান্তার প্রথম পক্ষের ছেলে-মেয়েকেও মেনে নিয়ে তিনি সংসার করেছেন। কিন্তু শান্তা তার উচ্চাকাক্সক্ষা ও বিলাসী জীবনের কারণে নিজের মর্যাদা ধরে রাখতে পারেনি। মা হয়েও বলতে বাধ্য হচ্ছি, নিজের তৈরি করা এমন অশান্তির কারণে শান্তা তার আগের সংসারও টিকিয়ে রাখতে পারেনি।
নজরুল ইসলাম বাবুলের সাবেক এই শাশুড়ি বলেন, তিনি (বাবুল) আমার মেয়ের নামে একটি বাসা, একটি প্রতিষ্ঠানও করে দিয়েছেন। প্রায় ৪ কোটি টাকা পুঁজি দিয়ে গড়া মোহাম্মদ আলী স্টিচ নামের প্রতিষ্ঠানের পুরো বিনিয়োগই নজরুল ইসলাম বাবুলের। এই প্রতিষ্ঠান থেকে মাসে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় হয়। এর একটি টাকাও নেননি নজরুল ইসলাম বাবুল। তবুও আমার মেয়ের টাকার চাহিদা কমেনি।
ঝর্ণা বেগমের অভিযোগ, শান্তা তার প্রথম পক্ষের মেয়ের জামাই মো. মোস্তাফিজুর রহমানের যোগসাজশে বারবারই নজরুল ইসলাম বাবুলকে টাকার জন্য তাগিদ দিতেন। যা পরিবারে অশান্তির সৃষ্টির আরও একটি কারণ। মা হয়ে তাকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি, আমি ব্যর্থ হয়েছি। গত রমজানেও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের কথা বলে সে নজরুল ইসলাম বাবুলের কাছ থেকে ৩০ লাখ ঋণ নিয়েছে। যার একটি টাকাও ফেরত দেয়নি শান্তা। এ নিয়ে আবারও সংসারে অশান্তি দেখা দেয়।
তিনি বলেন, নজরুল ইসলাম বাবুল সম্প্রতি তার ছেলে মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে যুক্তরাজ্য সফরে গেছেন। আমার মেয়ে অপপ্রচার করছেÑ নজরুল ইসলাম বাবুল তার ছেলেকে আটকে রেখেছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। গতকালও আমার সঙ্গে নাতি মোহাম্মদ আলীর সাথে কথা হয়েছে। সে ভালো আছে। তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেটা নবায়ন করতে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে তার ফিরতে দেরি হচ্ছে। নজরুল ইসলাম বাবুলও দেশে তার ব্যবসা বাণিজ্য ফেলে রেখে শুধু ছেলের কারণে যুক্তরাজ্যে আটকে আছেন।’ এ সময় তিনি মেয়ের মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান।