সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
টানা তৃতীয় দফা বন্যার ধকল সইতে না সইতে আবারও বাড়ছে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি৷ নিম্নাঞ্চলের পানি এখনো না কমলেও আবার নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে পাহাড়ি ঢলের পানি।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) ভারতের মেঘালয়ে ও সুনামগঞ্জে দফায় দফায় বৃষ্টিপাতের ফলে পানি বাড়তে শুরু করেছে।
ইতোমধ্যেই সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী খাসিমারা ও চেলা নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়ার সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমার পানি গেল ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার তবে তা এখনও বিপৎসীমার নিচে।
উপজেলার খাসিয়ামারা নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা মনোয়ার হক জানান, পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীটিতে ভাঙন থাকায় পানি দ্রুত প্রবেশ করছে উপজেলার বাংলাবাজার, আলীপুর বাজার, চকবাজার, বোগলাবাজার, পূর্ব বাংলাবাজার, টেংরা বাজার লিয়াকতগঞ্জ এলাকা দিয়ে।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল করিম জানান, ‘ঘরের পানি এখনও আছে এরই মধ্যে আবার পানি, এখন আমরা কই যাইতাম ইলান যদি পানি বাড়তে তাকে তাইলে পানিত পড়িয়া মরা লাগব। ’
একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন জানান, অনেক কষ্টে পানি থাকি ঘরটা বাঁচাইয়া রাখছি। ঘরে পানি ডুকছিল কোমর পর্যন্ত, এই দুইদিনে পানি অনেকটা কমি গেছিল সকাল থাকি আবার পানি বাড়া শুরু হইছে, আশ্রয়কেন্দ্র থাকি ফিরিয়া আইয়া আবার ওইখানেই ফিরিয়া যাওয়া লাগব।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা পানি বাড়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল থেকে এখানে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। পাশের দেশ ভারতের মেঘলায়েও বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ উপজেলার সীমান্তবর্তী খাসিমারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নিম্ন এলাকায় প্রবেশ করছে পানি। তবে এখন ওই এলাকাগুলোর নাম বলতে পারছি না আমি সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখে তারপর বলতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া এখনও যারা আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন তাদের খাবারের ব্যবস্থাও প্রশাসন করছে।
এদিকে সুনামগঞ্জের নদ নদীর পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম।
মো. জহুরুল ইসলাম আরও বলেন, এটি হাওর এলাকা হওয়ায় এখানে পানি থাকবেই। গেল ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ১৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি, দোয়ারাবাজার উপজেলায় গতকাল রাতে বৃষ্টিপাত হয়েছে আর পাহাড়ি ঢলও অব্যাহত থাকায় ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে গিয়েছে, এলাকাটি নিম্নাঞ্চল হওয়ায় পানি প্রবেশ করেছে।