স্টাফ রিপোর্টার :
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, যখন দেশে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয় তখন সরকারের প্রথম কাজ থাকে মানুষকে প্রাণে বাঁচানো। তারপর সরকার কি ক্ষতি হলো সেটি খুঁজে বের করে। এবারেও সরকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে- বন্যা পরবর্তী সময়ে ইউনিয়ন ভিত্তিক মানুষের ঘরবাড়ি, ক্ষেত-খামার ইত্যাদি বিষয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে। সরকার তার সাধ্য অনুযায়ী পুনর্বাসনসহ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করার চেষ্টা করবে।
সোমবার বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউসে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, বৃহত্তর সিলেট এবারে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। আগামীতে যে এমন বন্যা আসবে না তা বলা যায় না। তাই এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ ও ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের নদীমাতৃক দেশে ৫৪টি নদীর অববাহিকা রয়েছে। আর আমরা সবগুলো নদী ভাটিতে। তাই বেশিরভাগ নদী দিয়ে উজানে থাকা ভারত ও চীন থেকে পানি নেমে আসে। আর পানি যখন আসে তখন প্রচুর পলি এসে নদীগুলো ভরাট হয়ে যায়। তাই এই ৫৪টি নদীকে ড্রেজিং করে গভীর করা খুবই চ্যালেঞ্জিং বিষয়। তারপরও আমাদের বর্তমান সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এ উদ্যোগ নিয়েছে। গত ১০ বছরে ৫ শতাধিক ড্রেজার মেশিন কেনা হয়েছে। নদী খননের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে, এদিকেও শুরু হবে।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ভারতের নদীগুলো থেকে হঠাৎ করে ঢল নেমে এই অঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে পানি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে স্থায়ী সমাধানের পথ বের করতে হবে। আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরকে এ বিষয়ে অবহিত করবো।
মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেন, আমাদের দেশে সরকার বা সাংবাদিক কিছু একটা বললেই নেতিবাচক মন্তব্য চলে আসে। নেতিবাচক বক্তব্য দেশের জন্য কখনোই ভালো নয়। আমাদেরকে ইতিবাচক কথা বলতে হবে। সবাই ইতিবাচক হলে সীমিত সম্পদ নিয়েই আমাদের দেশ অনেকদূর এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, একসময় বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক নেতিবাচক কথা হতো। সেই বাংলাদেশ এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর কারণ একমাত্র আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় লিডারশিপ। প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের জন্যই আজ বাংলাদেশ বিশ্বে একটি মর্যাদার জায়গায়। তাঁর জন্যই পদ্মা সেতুর মতো একটি বিস্ময় বাংলাদেশ উপহার দিতে পেরেছে। এটি শুধু একটি সেতুই নয়, এটি আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগে বেশ আগ্রহী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, সংশ্লিষ্টরা সরকারকে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম দেখালে আসলে তাদের ক্ষতি। বরং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি দেখালেই লাভ, বেশি বরাদ্দ আসবে। তাই মনে হয় আপনাদের (সাংবাদিকদের) এ প্রেডিকশনটা ভুল।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন ও জেলার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান।