শিপন আহমদ ওসমানীনগর থেকে :
সিলেটের ওসমানীনগরে একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী দুই দিনের ব্যবধানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। দুই শিক্ষার্থীর রহস্যজনক আত্মহত্যার বিষয় নিয়ে গোটা উপজেলায় আলোচনা সমালোচনার পাশাপাশি তৈরী হয়েছে ধুম্্রজাল। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মাহত্যা করা দুই শিক্ষার্থীই উপজেলার গোয়ালাবাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে একই কায়দায় দুটি ঘটনা ঘটলেও কি কারণে দুই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করছে তার কোন সু-নির্দিষ্ট কারণ খোঁজে পায়নি প্রশাসন।
আত্মহত্যার ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যেও শোকের ছায়া নেমে এসছে। ঘটনার কারণ না জানায় অভিভাবক ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা রয়েছেন আতংকে। এদিকে, আত্মহত্যা প্রবণতা রোধে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সচেতনতার প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আসক্তি বিপদজনক বলেও মনে করছেন তারা।
জানা গেছে, ১৩ জুন সোমবার রাতের খাবার শেষে নিজ বসতঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে ইমরান আহমদ শাওন (১৭) নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। সে উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের পশ্চিম ব্রাহ্মনগ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে। এর আগের দিন রোববার বিকালে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় প্রান্ত দেব (১৭) নামের আরো এক স্কুল শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার একই ইউনিয়নের গয়নাঘাট এলাকার প্রদীপ দেবের ছেলে। ময়না তদন্ত শেষে দুটি লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। গত সোমবার রাতে প্রান্ত দেবের লাশ দাশপাড়াস্থ শ্মশান ঘাটে দাহ করা হয়। এবং ইমরান আহমদ শাওনের লাশ বুধবার বিকালে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে, মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে একই কায়দায় একই বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষারর্র্থীরা আত্মহত্যা মেনে নিতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পৃথক ঘটনায় অভিভাবকদেরও ভাবিয়ে তুলছে। ঘটনা দুটির করাণ না জানায় সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজালের। আত্মহত্যা প্রবণতা রোধে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধিসহ অভিবাবকদেরও শিক্ষার্থীদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
গোয়ালাবাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আরশাফ আলী বলেন, দুইটি ঘটনাই দুঃখ জনক। কি কারণে এমন ঘটনা ঘটছে তা জানা যায়নি। বুধবার আমাদের বিদ্যালয়ে ম্যানজিং কমিটির সভার কথা ছিলো। আবহাওয়া ভালো না থাকায় সভায় হয়নি। ম্যানজিং কমিটির সভা শেষে জনসচেতনতার উদ্যোগ নেয়া হবে।
গোয়ালাবাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, দুই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার বিষয়টি জেনেছি। জরুরী ভিত্ততে মিটিং করে জনসচেতনতার বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম মাঈন উদ্দিন বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার রোধে জনসচেতনতা অব্যাহত রয়েছে। দুটি আত্মহত্যার ঘটনার কারণ উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত করছে।