ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সৌজন্য সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী ॥ রোহিঙ্গারা অপরাধে জড়াচ্ছে প্রত্যাবাসন অনিশ্চয়তায়

3

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রত্যাবাসনের দীর্ঘস্থায়ী অনিশ্চয়তা রোহিঙ্গাদের অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত হতে প্রলুব্ধ করছে। তারা (রোহিঙ্গারা) তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে দীর্ঘ অনিশ্চয়তার কারণে হতাশ হয়ে পড়ছে, যার একটি সম্ভাব্য ঝুঁকি রয়েছে। কারণ এটি তাদের অনেককে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত হতে প্ররোচিত করছে। মঙ্গলবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারী বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাত করলে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউএনএইচসিআরকে বলেন, বাংলাদেশ সরকার রাখাইন রাজ্যে যা পাওয়া যায় তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম ও ভাষার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম অনুসরণ করে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার সুবিধা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ১১ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক থাকার কারণে গভীর বনভূমি কক্সবাজারের উখিয়ার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তারা গাছ কাটার মাধ্যমে বন হ্রাস করছে এবং এলাকার পরিবেশগত বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। প্রতি বছর ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান বলেন, তাঁর সরকার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ ভাষানচর দ্বীপে রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে। আমাদের সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়ার জন্য ভাষানচরকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে গড়ে তুলেছে। তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে অস্থায়ী আশ্রয় স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী উদ্বাস্তু, রাষ্ট্রহীন ও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের সহায়তায় ইউএনএইচসিআরের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বৈঠকে ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশঙ্কার সঙ্গে একমত হন যে, রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ অবস্থান তাদের অনেককে অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িত হতে প্ররোচিত করবে। মিয়ানমার সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে তিনি বর্তমান মিয়ানমার সরকারকে অনুরোধ করেছেন। মিয়ানমারের বর্তমান সরকার প্রত্যাবাসন শুরু করতে সম্মত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইউএনএইচআর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে। ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বাংলাদেশের প্রধামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বিপুল সংখ্যক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় সরকারের প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং আফগানিস্তান ইস্যু বিশ্বব্যাপী শরণার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
এ্যাম্বাসেডর-এ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সিনিয়র সচিব মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডার ক্লাউ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।