বিশ্বব্যাপী খাদ্য বিপর্যয় আসন্ন

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থা দুর্বল হয় করোনা মহামারিতে। এর প্রধান কারণ দেশে দেশে ধারাবাহিকভাবে কঠোর বিধিনিষেধ। বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে ব্যস্ত তখনই শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ। যা খাদ্য সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। এরই মধ্যে দেশে দেশে দেখা দিয়েছে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি। বেড়ে গেছে জীবনযাত্রার ব্যয়।
জানা গেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমাদের কঠোর বিধিনিষেধের মুখে পড়েছে রাশিয়া। অন্যদিকে বন্ধ হয়ে গেছে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি। ইউক্রেন ও রাশিয়া বিশ্বব্যাপী খাদ্যের ১০ ভাগের এক ভাগ সরবরাহ করে। তারা বিশ্বের গম রপ্তানির ৩০ শতাংশের পাশাপাশি সূর্যমুখী তেলের ৬০ শতাংশ উৎপাদন করে। কমপক্ষে ২৬টি দেশ তাদের অর্ধেকেরও বেশি খাদ্যশস্যের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে গমের দাম বেড়েছে ৫৩ শতাংশ। আরও ৬ শতাংশ বেড়ে যায় ভারতের গম রপ্তানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের পর।
গত বছরের জুলাইতে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রাশিয়া বিশ্ব চাহিদার ১৬ শতাংশ গম রপ্তানি করে। এক্ষেত্রে ইউক্রেনের অবদান ছিল ১০ শতাংশ। কিন্তু সংঘাত ছড়িয়ে পড়ায় দেশ দুটি শস্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হয়।
ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের (ইএইইউ) বাইরে গম, রাই, যব ও ভুট্টা রপ্তানি ৩০ জুন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করে। এদিকে ইউক্রেন ওডেসাতে একমাত্র অবশিষ্ট বন্দর বন্ধ করে দিয়েছে।
তাছাড়া কাজাখস্তানসহ কয়েকটি প্রধান শস্য সরবরাহকারী দেশ যখন রপ্তানি বন্ধ করে দেয় তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। মূলত অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতেই দেশগুলো এমন সিদ্ধান্ত নেয়।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা বলছে, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ জমি ২০২২ সালের মৌসুমে অনাবাদি বা চাষের আওতার বাইরে থেকে যাবে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারে না এমন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১৬০ কোটি। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে প্রায় ২৫ কোটি। পাশাপাশি আরও কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্র্যতার মধ্যে পড়তে পারে।
এর আগে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস সামনের দিনগুলোতে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ঘাটতি দেখা যাবে বলে সতর্ক করেছেন।
এদিকে বিশ্ব সম্প্রদায়কে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইউক্রেনের কৃষিনীতি ও খাদ্যমন্ত্রী মাইকোলা সলস্কি বলেন, চলতি বছর প্রতি টন গমের দাম বেড়ে ৭০০ ডলারে দাঁড়াতে পারে, যা বর্তমানের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি। এখন প্রতি টন গম বিক্রি হচ্ছে ৪৩০ ডলারে।