ডিআইজি হচ্ছেন পুলিশের ৩৪ কর্মকর্তা

3

কাজিরবাজার ডেস্ক :
পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), তৃতীয় গ্রেডে ৩৪ জনকে পদোন্নতি দিতে যাচ্ছে সরকার। ডিআইজি হিসেবে একসঙ্গে এত বেশি সংখ্যক পদোন্নতি বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে এই প্রথম। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ওই ৩৪ জনকে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) কিংবা আগামী রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রীপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে গ্রেড-৩ পদমর্যাদার ডিআইজি পদে পুলিশের ৩৪ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ডিআইজি পদে পদোন্নতি হয়। এরপর গত প্রায় দেড় বছর এই পদে (ডিআইজি) কোনো পদোন্নতি হয়নি। সর্বশেষ পদোন্নতি হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবারের পদোন্নতির জন্য ১৮ ও ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিবেচনা করা হয়েছে। এছাড়া সিনিয়র ব্যাচের কয়েকজন কর্মকর্তাও আছেন তালিকায়। ডিআইজি পদে পদোন্নতির জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রায় ১৫০ জনের একটি প্রাথমিক তালিকা পাঠানো হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সেখানে মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পর্যালোচনার পর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়। ওই তালিকা পাঠানো হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ডিআইজি হিসেবে ১৮টি নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে। আগের কিছু পদ খালি ছিল। এ কারণে একসঙ্গে এতগুলো পদে পদোন্নতি হচ্ছে। এবার ডিআইজি পদে যারা পদোন্নতি পাচ্ছেন তাদের মধ্য বিসিএস-পুলিশ ক্যাডারের ১২তম ব্যাচের একজন, ১৫তম ব্যাচের দুজন, ১৭তম ব্যাচের দুজন রয়েছেন। এছাড়া ১৮তম ব্যাচের ১৪ জন এবং ২০তম ব্যাচ থেকে ১৫ জনের নাম রয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ১১ জন, ২০১৯ সালের অক্টোবরে আটজন, ২০১৮ সালের নভেম্বরে ১৭ জন, ২০১৭ সালের অক্টোবরে ১৫ জন এবং ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১৮ জনকে ডিআইজি পদে পদোন্নতি দেয় সরকার।
ডিআইজি পদে পদোন্নতি শেষে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে ১১০ জনকে পদোন্নতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সেটি হলে এ পদে দেশের ইতিহাসে একসঙ্গে সর্বোচ্চ সংখ্যক পদোন্নতি দেওয়ার নজির তৈরি হবে। অতিরিক্ত ডিআইজির ক্ষেত্রেও নতুন ৬৮টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু সংখ্যক অতিরিক্ত ডিআইজির পদ খালি আছে।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. কামরুজ্জামান বলেন, এসএসবি সম্পন্ন হয়েছে। তবে জিও (সরকারি আদেশ) জারি হয়নি, যেকোনো সময় হবে। আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে, তারপর জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
যেভাবে নতুন পদের সৃষ্টি
পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সাংগঠনিক কাঠামোর অভ্যন্তরীণ সংস্কারের মাধ্যমে ১৭৮টি পদের বিপরীতে পাঁচটি শর্তসাপেক্ষে বেতন গ্রেড নির্ধারণ করা হয়। গেল বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এই সম্মতি দেয়। পরে ওই বছরের ১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে পদগুলো মঞ্জুর করে। এর আগে মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নেতৃত্ব সুদৃঢ় করতে পুলিশের কাঠামোতে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পুলিশ।
সেখানে অভ্যন্তরীণ সংস্কারের মাধ্যমে পুলিশের বিদ্যমান জনবল কাঠামোতে পরিবর্তন এনে নিম্নপর্যায়ের ক্যাডার পদের সংখ্যা কমিয়ে তার পরিবর্তে বাড়তি উচ্চপদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়। সেখানে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সাংগঠনিক কাঠামোর অভ্যন্তরীণ সংস্কারের মাধ্যমে ২০টি এসপি ও ১৫৮টি এএসপি এবং ৪৮টি অ্যাডিশনাল এসপিসহ সর্বমোট ১৭৮টি পদ বিলুপ্ত করা হয়। একই সঙ্গে চারটি অ্যাডিশনাল আইজি, ১৮টি ডিআইজি, ৮৮টি অ্যাডিশনাল ডিআইজি, ২০টি এসপি এবং ৪৮টি অ্যাডিশনাল এসপিসহ মোট ১৭৮টি ক্যাডার পদের প্রস্তাবনা করা হয়।