বাণিজ্য ঘাটতি

9

আমদানির সঙ্গে বাণিজ্যের সম্পর্ক নিবিড়। পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে না পারলে বাণিজ্য ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। দেশের জন্য প্রয়োজনীয় কিংবা সুফল বয়ে আনবে এমন পণ্য আমদানিই সমীচীন। দেশে যে পণ্য যথেষ্ট উৎপাদিত হয় কিংবা যেসব পণ্যশিল্পের বিকাশের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব পণ্যের আমদানি নেতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। এজন্যেই প্রয়োজন দূরদর্শী আমদানি নীতি। সরকার সম্প্রতি তিন বছর মেয়াদে অর্থাৎ ২০২১-২৪ সালের জন্য আমদানি আদেশের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। নতুন আমদানি নীতিতে চিংড়ি, ঘন চিনি, কৃত্রিম সরিষার তেলসহ ২৬ শ্রেণীর পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগের আদেশে ১২ শ্রেণীর পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ থাকলেও এবার তা বেড়েছে দ্বিগুণ।
রফতানির তুলনায় আমদানি বৃদ্ধি, বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে বর্তমানে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। অর্থনীতিবিদরা বলেন, পণ্য আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণে বাণিজ্য ঘাটতি অনেকটাই বেড়ে গেছে। দেশের অর্থনীতি স্বাভাবিক রাখতে আমদানি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তা না হলে সঙ্কটে পড়বে অর্থনীতি। সত্য যে, করোনা মহামারী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই আমদানিতে জোয়ার বইছে। আর এতে আমদানি-রফতানির মধ্যে ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে। গত বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ছিল ৬০ ডলার। সম্প্রতি সেই তেল ১১২ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে এর দর ১৩৯ ডলারে উঠে গিয়েছিল। এতেও আমদানি ব্যয় বেড়েছে। অর্থনীতির মন্দাবস্থার সূচক বাণিজ্য ঘাটতি। বাণিজ্য ঘাটতি রোধে সংশ্লিষ্টরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে প্রাণসঞ্চার করবেন জাতীয় অর্থনীতিতে, এটাই প্রত্যাশা। নতুন আমদানি নীতি এক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে আমরা আশাবাদী।