কাজিরবাজার ডেস্ক :
অদূর ভবিষ্যতে জন্মনিবন্ধন ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংক্রান্ত সেবা মিলবে না। তাই এখন থেকেই অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে মিল রেখেই নিতে হবে জন্মনিবন্ধন সনদ।
শুধু তাই নয়, মৃত্যু নিবন্ধন সনদ ছাড়াও কারো নাম ভোটার তালিকা থেকে কর্তন করা হবে না।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সব ডকুমেন্টে একই রকম তথ্য না থাকায় এনআইডি সংশোধনের আবেদন এখন অনেকে বেশি। এতে নাগরিকদের যেমন হয়রানি হচ্ছে, তেমনি অপচয় হচ্ছে শ্রম ঘণ্টাও। শুধু তাই নয়, নাগরিকদেরও হচ্ছে অর্থের অপচয়।
অন্যদিকে মৃত্যু নিবন্ধন সনদ ছাড়া ভোটার তালিকা থেকে নাম কর্তনের ফলে অনেক জীবিত লোকও করণীক ভুলে মৃতের তালিকায় পড়ে যাচ্ছেন। আর ইসির তালিকায় কেউ একবার মৃতের খাতায় পড়ে গেলে সেটাকে জীবিত করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের। তাই মৃত্যু নিবন্ধন সনদকে ভোটার কর্তনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, যারা নিরক্ষর কিংবা প্রাইমারির গণ্ডিও পেরোতে পারেননি, তাদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ আবশ্যিকভাবে জমা দিতে হবে। এছাড়া যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ রয়েছে তাদেরও জন্ম সনদ দিতে হবে। এতে সব সরকারি নথিতে একই রকম তথ্য থাকবে নাগরিকদের। আর এটা নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে কারো এনআইডি সংশোধনের তেমন প্রয়োজনই পড়বে না।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেন, একজন ব্যক্তির জন্মের পর থেকে সব সরকারি নথিতে একই রকম তথ্য থাকবে, এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে সচেতনার অভাবে এতো দিন একেক জায়গায় একেক রকম তথ্য অনেকেই দিয়েছেন। কেউ অনচ্ছিকৃত ভুল করেছেন, কেউ আবার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এটা করেছেন। তবে সচেতনার অভাবে একটি বড় অংশ এই ভুলটি করেছেন। কিন্তু এখন তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমাদেরও কাজের চাপ বেড়ে গেছে। তাই ভবিষ্যতে জন্মনিবন্ধন ছাড়া এনআইডি দেওয়া হবে না। এমনকি মৃত্যু নিবন্ধন সনদ ছাড়া মৃত ভোটারের নামও কর্তন করা হবে না।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫০ লাখ মৃত ভোটারের নাম কর্তন করা হয়েছে ভোটার তালিকা থেকে। এদের মধ্যে জীবিত পাঁচ হাজারে মতো নাগরিকের নামও মৃতের তালিকায় চলে এসেছে। মৃত্যু সনদের ভিত্তিতে নাম কর্তন করা হলে, এই সমস্যাটি হতো না।
বর্তমানে ইসির কাছে তিন লাখ এনআইডি সংশোধনের আবেদন ঝুলে রয়েছে। জন্ম সনদের ভিত্তিতে পরিবারের দেওয়া নামে এনআইডি করা হলে এতো সংশোধনের আবেদনও আসতো না।
দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৩২ লাখ। ২০০৭- ২০০৮ সাল থেকে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে নাগরিকদের তথ্য একটি সার্ভারে সংরক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর এই সার্ভারের সহায়তা নিয়েই নাগরিকদের এনআইডি দিচ্ছে সংস্থাটি।