কাজিরবাজার ডেস্ক :
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল ও পরবর্তীতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে পার্লামেন্ট পুনর্বহালেরও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিদের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে বহুল আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এ রায়ের ফলে আবারও বিরোধীদের অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হবে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীকে।
এর আগে, বিকেলে চতুর্থ দিনের মতো আলোচিত এ মামলার শুনানি শুরু হয়। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে এতে অংশ নেন বিচারপতি মুনীব আখতার, বিচারপতি আইজাজুল আহসান, বিচারপতি মাজহার আলম ও বিচারপতি জামাল খান মন্দোখেল।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, এটি স্পষ্ট যে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরির গত ৩ এপ্রিলের রুলিং ভুল ছিল।
তিনি বলেন, মূল প্রশ্ন হলো, সামনে কী ঘটবে। এখন কীভাবে এগোতে হবে সে বিষয়ে পিএমএল-এন কৌঁসুলি ও পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল খালিদ জাভেদ খান আদালতকে নির্দেশনা দেবেন। আমাদের জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে।
রায় ঘোষণাকালে পাকিস্তানি পার্লামেন্টের স্পিকার আসাদ কায়সারকে আগামী শনিবার (৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বিশেষ অধিবেশন আহ্বানের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। ওইদিনই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতিদের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে সর্বসম্মতভাবে এ রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ের পরপরই আদালত চত্বরে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে শুরু করেন।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আগেই পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। টেলিভিশনের ফুটেজে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন দেখা গেছে। রায় উপলক্ষে আদালতে বিপুল সংখ্যক আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমকর্মীর উপস্থিতি দেখা যায়।
গত রবিবার ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলে সেটি খারিজ করে দেন স্পিকার। এরপর প্রেসিডেন্টের কাছে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তার প্রস্তাবে পার্লামেন্টে ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
এতে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ডেপুটি স্পিকার অসাংবিধানিকভাবে অনাস্থা ভোট বাতিল করেছেন। শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি নোটিশ জারি করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।