দেশের বিভিন্ন জেলায় সরকারি জলমহাল পুনঃখনন ও সংস্কারের নির্দেশ

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত ভরাট হয়ে যাওয়া সরকারি জলমহাল পুনঃখনন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি জলমহাল ইজারা প্রদান সংক্রান্ত কমিটির ৬৮তম সভায় ভূমিমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।
ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান এবং মন্ত্রণালয়ের সায়রাত মহাল শাখার কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ইজারার জন্য প্রস্তাবকৃত জলমহাল সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকরা এসময় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভরাট হওয়া সরকারি জলমহাল পুনঃখনন ও সংস্কার করা গেলে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি ও পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, মৎস্য আহরণ বাড়াতে পারলে খাদ্য চাহিদা মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।
উল্লেখ্য, সভায় দেশের বিভিন্ন জেলার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট জেলায় অবস্থিত ১৩৭টি ২০ একরের ঊর্ধ্বে সরকারি জলমহালের ইজারা প্রস্তাব ৬ বছরের জন্য অনুমোদন করতে উত্থাপন করা হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়া উদ্বোধন করেন। প্রচলিত পদ্ধতিতে জলমহাল ইজারার আবেদনে অনেক সময় ইজারা প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগী ও দালালদের অপকৌশলের কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা নানান সমস্যার সম্মুখীন হতেন। অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়া চালুর ফলে এখন আর সেই সুযোগ নেই। অনলাইনে জলমহাল আবেদন শুরুর পর জলমহাল সংশ্লিষ্ট অংশীজন থেকে কোনও অভিযোগ আসেনি।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উন্নয়ন প্রকল্পে ৬ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে সরকারি জলমহাল এবং বিশেষ ধরনের বিবিধ জলমহাল ইজারা আবেদন মন্ত্রণালয় পর্যায়ে ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘সরকারি জলমহাল ইজারা সংক্রান্ত কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়।
‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একরের ঊর্ধ্বে বদ্ধ সরকারি জলমহালের ইজারা আবেদন ‘জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়। ‘সাধারণ আবেদনে’ ৩ বছরের জন্য ২০ একর পর্যন্ত বদ্ধ জলমহালের ইজারা আবেদন ‘উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি’র সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন হয়।
প্রসঙ্গত, বিল, হাওর, বাওর, নিম্ন জলাভূমি ও নদ-নদীতে মৎস্য আহরণের এলাকাকে জলমহাল বলা হয়। এক হিসাবমতে ছোট-বড় মিলিয়ে দেশের জলমহালের সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার। এসব ইজারা দিয়ে বছরে প্রায় শতকোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়।
বেশ কয়েকটি জলমহাল ঐতিহ্যবাহী ও দর্শনীয় স্থান হিসেবে ইজারাবিহীন রাখা হয়েছে। এ তালিকায় আছে দিনাজপুরের রামসাগর, সিরাজগঞ্জের হুরাসাগর ইত্যাদি। মাছ সংগ্রহের অভয়াশ্রম ঘোষিত জলমহালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুনামগঞ্জের টাংগুয়ার হাওর, মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর ইত্যাদি।