নগরীতে টিসিবির পণ্য কিনতে নারী-পুরুষদের উপচে পড়া ভিড়

7
কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য কিনতে দীর্ঘ লাইন। ছবি- মামুন হোসেন

স্টাফ রিপোর্টার :
সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও রবিবার থেকে বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১৪টি ওয়ার্ডের ১৮টি স্থানে ও ১৩টি উপজেলার৪৪টি স্থানে একযোগে এই পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি।
নগরীর প্রতিটি ট্রাকের পেছনে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন দেখা যা। খরা রোদে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য ক্রয় করছেন ক্রেতাদের।
টিসিবির পণ্য কিনতে আসা এক নারী জানান, পাড়ার একটি টেইলার্সের দোকানে কাজ করে সংসার চালাই। প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও আমাদের মজুরী বাড়ে না। তাই দোকান থেকে ছুটি নিয়ে টিসিবির লাইনে দাঁড়িয়েছি, যাতে কিছুটা হলেও কম টাকায় জিনিসপত্র কিনতে পারি।
রিক্সাচালক মুজাক্কির আলী বলেন, সরকারকে ধন্যবাদ জানাই কম টাকায় পণ্য ক্রয় করার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় জন্য। তিনি বলেন, আমাদের সরকারের তো টাকার অভাব নেই। এভাবে সারা বছর টিসিবি পণ্য বিক্রি করলে আমাগো মতো গরীব লোকজন কম টাকা জিনিসপত্র কিনতে পারতো। এর আগে শনিবার সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, ফ্যামিলি কার্ড’র মাধ্যমে গতকাল থেকে পুরো বিভাগের ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫২১টি পরিবার টিসিবি’র পণ্য কিনতে পারবে।
জানা যায়, টিসিবি’র ট্রাক থেকে প্রতিজন ১১০ টাকা প্রতি লিটার দামে ২ লিটার সয়াবিন তেল, ৫৫ টাকা প্রতি কেজি দামে ২ কেজি চিনি ও ৬৫ টাকা প্রতি কেজি দামে ২ কেজি মসুরের ডাল কিনতে পারবেন। সুবিধাভোগীরা ফ্যামিলি কার্ড’র মাধ্যমে মাসে দুইবার এই সুবিধা পাবেন।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, আপাতত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার ১৪টি ওয়ার্ডে (১ থেকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড) টিসিবি’র পণ্য পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে অন্যান্য ওয়ার্ডেও পাওয়া যাবে এসব পণ্য। সিটি কর্পোরেশনের ১৪টি ওয়ার্ডের ১৮টি স্থানে ও ১৩টি উপজেলার ৪৪টি স্থানে একযোগে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়। সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদা মনিটরিং টিমও গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার মোট ৪৫ হাজার পরিবার টিসিবি’র পণ্য পাবেন। তাদের জন্য বরাদ্দ থাকবে মোট ৯০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল ৯০ হাজার মেট্রিক টন চিনি ও ৯০ হাজার মেট্রিক টন মসুরের ডাল। আর সিলেট জেলার ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩৬৩ পরিবার পাবে মোট ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭০০ লিটার সয়াবিন তেল, ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন চিনি ও ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন মসুরের ডাল।
এছাড়া মৌলভীবাজার জেলার ৭২ হাজার ৪২৬টি, সুনামগঞ্জ জেলার ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৯১২টি ও হবিগঞ্জ জেলার ৯১ হাজার ৮২০টি পরিবার টিসিবি’র পণ্য পাবে বলে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক আরও জানান, টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে থাকবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে মনিটরিং টিম। এছাড়াও মাঠে থাকবে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের পক্ষে ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে পৃথক মনিটরিং টিম। এদিকে, টিসিবি’র পণ্য বিক্রি উপলক্ষে সকাল থেকেই নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে কার্ডধারী মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাছুদীঘিরপারে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।