কাজিরবাজার ডেস্ক :
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ‘সর্বগ্রাসী দুর্নীতির’ প্রতিবাদে সারা দেশে প্রতীকী অনশনসহ আবারো ৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
শনিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এর আগে একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলসহ ১১ দিনের কর্মসূচি পালন করে। এছাড়াও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে আগামী মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান, ২৪ মার্চ ঢাকা ব্যতিত সব মহানগরীতে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন, ৩০ মার্চ সব জেলা সদরে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন, ৩১ মার্চ সব উপজেলা পর্যায়ে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন ও ২ এপ্রিল ঢাকা মহানগরীতে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন পালন করা হবে।
তিনি বলেন, এখন সাংগঠনিক জেলা ও ইউনিটে বিএনপির কাউন্সিল চলছে। কর্মসূচির ধার্যের দিনে যেসব জেলা ও উপজেলায় বিএনপির কাউন্সিল হবে, সেখানে কর্মসূচি স্থগিত থাকবে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি হলো- ২৬ মার্চ ভোর ৬টায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের সব ইউনিট কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে যাত্রা এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। একইদিন জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ঢাকায় ফিরে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহিদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে দলের জাতীয় নেতা ও সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। ৩০ মার্চ বিএনপির উদ্যোগে রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
রিজভী জানান, কেন্দ্রীয় বিএনপি মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পোস্টার প্রকাশ করবে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সম্মিলিতভাবে সারা দেশের জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌর শাখায় স্থানীয় সুবিধা অনুযায়ী বিভিন্ন কর্মসূচি করবে। নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে সব দলীয় কার্যালয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি শহিদ জিয়াউর রহমানের ছবিসহ আলোকসজ্জা করা হবে।
রিজভী বলেন, একটি দল একটানা এক যুগের বেশি সময় ধরে বিনাভোটে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রাখার পর এখন তাদের নিজেদের কর্ম নিয়ে গর্ব করে বলার মতো কিছু নেই। নিশিরাতের সরকারের আমলে প্রতিটি মেগা প্রজেক্টের নামে যেসব প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে প্রত্যেকটি প্রকল্পই দুর্নীতি আর মেগা লুটপাটের একেকটি জলন্ত উদাহরণ। বর্তমান বিনাভোটের সরকারের আমলে উন্নয়ন যা হয়েছে সেটি হচ্ছে দুর্নীতির উন্নয়ন। ফলে নিজেদের দুর্নীতি, দুরাচার অপকর্ম থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তাদের এখনো একটাই অস্ত্র বিএনপি সম্পর্কে অকথ্য, অশালীন, অসত্য প্রোপাগান্ডা চালানো। এ কারণেই প্রতিদিন তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিএনপির বিরুদ্ধে ক্রমাগত মিথ্যাচার করে চলছেন।
তিনি বলেন, ইদানিং তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) রাজনৈতিক শিষ্টাচারের সব সীমা লঙ্ঘন করে বিএনপির নেতৃত্ব নিয়েও বাকোয়াস শুরু করেছেন। বিএনপি নিয়ে টেনশনে তাদের ঘুম হচ্ছে না। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, দেশ এবং জনগণের কল্যাণে যা কিছু অর্জন তার সবকিছুই বিএনপির হাত ধরে শুরু হয়েছে। ‘স্বাধীনতার ঘোষকের’ নেতৃত্বে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে ‘আধুনিক, স্বনির্ভর, গণতান্ত্রিক এবং কল্যাণ রাষ্ট্রে’ পরিণত হয়েছিল। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ‘বাংলাদেশ এশিয়ার এমারজিং টাইগারে’ পরিণত হয়েছিল। আর গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির অবিসংবাদিত নেতা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গুম-খুন-অপহরণ-হামলা-মামলা-জেল-জুলুম চালিয়ে গত এক যুগের বেশি সময় ধরে বিনাভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা এই অপশক্তির বিদায় চায় জনগণ। জনগণ দুর্নীতি-দুরাচার-পাপাচারে ভরা এই সমাজের পরিবর্তন চায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল প্রমুখ।