স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের প্রায় ৩০০ যুবককে রোমানিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর নামে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে আমিন রহমান ট্রাভেলসের মালিক। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে নগরীর জিন্দাবাজার হক সুপার মার্কেটস্থ ট্রাভেলসে বিক্ষোভ করেন প্রতারণার শিকার হওয়া যুবকরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, ৯০ দিনের মধ্যে রোমানিয়ায় পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় আমিন রহমান ট্রাভেলস। ওই বিজ্ঞাপন দেখে তারা নগরীর জিন্দাবাজার হক সুপার মার্কেটস্থ ট্রাভেলসে যোগাযোগ করেন। তখন ট্রাভেলসের মালিক আমিন রহমান জানান, রোমানিয়ায় যেতে হলে ৬ লাখ টাকা লাগবে। প্রথমে বুকিং মানি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ও ওয়ার্কপারমিট আসার পর দিতে হবে আরো ৫০ হাজার টাকা। বাকি ৫ লাখ দিতে হবে ভিসা হওয়ার পর। ট্রাভেলস মালিক আমিনের কথামতো রোমানিয়ায় যেতে আগ্রহীরা তার সাথে স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি করে টাকা দেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রোমানিয়ায় ফ্লাইট দেয়া শুরুর কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন বিকেল ৪টা থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দেন ট্রাভেলস মালিক আমিন রহমান। পরে অনেকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাদের পাসপোর্টে লাগানো ভিসাও ছিল জাল। এছাড়া অনেককে ভিসা হওয়ার কথা বললেও তাদেরকে পাসপোর্ট ফেরত দেননি আমিন।
জকিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গোটারগ্রামের বাসিন্দা রুহুল আমিন জানান, চুক্তি অনুযায়ী ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা তিনি আমিনের হাতে তুলে দেন। তাকে ওয়ার্কপারমিটের কাগজ দেখিয়ে ট্রেনিংয়ের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তিও করেন আমিন। আগামী ৩ মার্চ তার ফ্লাইট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি তার পরিচিত একজনের মাধ্যমে ভারতস্থ রোমানিয়া এম্বেসিতে ভিসার কপি পাঠান। তখন এম্বেসি থেকে জানানো হয় ওই ভিসা নকল।
রাজনগরের মাহবুবুর রহমান মঞ্জু নামের এক প্রতারিত যুবক জানান, ঢাকা থেকে তার ফ্লাইট ছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি। এজন্য তিনি আগের দিন ঢাকায় যান। কিন্তু বিকেল ৪টা থেকে আমিনের মোবাইল বন্ধ পান। তখন তিনি বুঝতে পারেন টাকা নিয়ে আমিন পালিয়ে গেছে। পরে হতাশ হয়ে সিলেট ফিরে আসেন। মঞ্জু জানান, তিনি বাড়ির জায়গা বিক্রি করে আমিনকে ৭ লাখ টাকা দিয়েছেন রোমানিয়া যাওয়ার জন্য। প্রতারণার বিষয়ে তিনি এবং আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী থানায় গেলেও পুলিশ মামলা না নিয়ে কোর্টে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে আমিন রহমান ট্রাভেলসের মারওয়া বেগম চৌধুরী নামের এক কর্মকর্তা জানান, আমিন রহমান তাদের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে তিনি বলেছেন, একটি সমস্যায় পড়ার কারণে তার মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি সবার ফ্লাইট দেবেন। আর যদি না পারেন তবে সবার টাকা ফেরত দেবেন।