স্টাফ রিপোর্টার :
কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীমা আক্তার খানম এমপি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান মোল্লা ও সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব সিলেট জেলা কৃষকলীগকে ধ্বংস করতে নানা ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা কৃষকলীগের কমিটিকে তাদের পকেটে ঢুকাতে তারা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন সিলেট জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুল ইসলাম। বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তিনি। সিলেট জেলা কৃষকলীগকে রক্ষায় তিনি সাংগঠনিক নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে অধ্যক্ষ শামসুল ইসলাম বলেন, সিলেট জেলায় বাংলাদেশ কৃষকলীগ একটি শক্তিশালী সংগঠন। কিন্তু তারা কৃষকলীগকে ধ্বংস করতে মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছেন। তারা সিলেট জেলা কৃষকলীগকে বিভাজন ও সাংগঠনিক সংকট সৃষ্টির জন্য অপতৎপরতা শুরু করেছেন। সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অগঠনতান্ত্রিক ও মনগড়া কার্যক্রম শুরু করেছেন উপরোক্ত তিনজন। শামসুল ইসলাম বলেন, বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলন করতে জেলা কমিটি আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী রবিবার তারিখ নির্ধারণ করে দেয়। সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করে দিলেও জেলা কমিটিকে না জানিয়ে সম্মেলনের ব্যানার ও পোষ্টার তৈরি করা হয়। যা বাংলাদেশ কৃষকলীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। এই ব্যানার ও পোষ্টারে উদ্বোধক হিসেবে জেলা কৃষকলীগের সভাপতি শাহ নিজাম উদ্দিন, প্রধান অতিথি হিসেবে সিলেট -৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব ও অতিথি হিসেবে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এবং সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম দেয়া হয়। পোষ্টারে জেলা কমিটির আর কারো নাম দেয়া হয়নি। উদ্বোধক হিসেবে জেলা সভাপতির নাম দিলেও তিনি এ বিষয়ে কোন কিছুই জানেনা। এর প্রেক্ষিতে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্রী সমীর চন্দ্র চন্দ, সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুমা স্মৃতি এমপি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান মোল্লা ও সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক টিমের প্রধান সহসভাপতি দেওয়ান জয়নাল আবেদীনকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবগত করা হলে বিষয়টি তারা দেখছেন বলে আমাদেরকে জানান। তাৎক্ষণিকভাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক (সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব ও বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি জানানো হয়। সম্মেলনের তোড়জোড় দেখে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ককে সম্মেলন স্থগিত করার জন্য নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশের কপি কেন্দ্রীয় সকল নেতৃবৃন্দের নিকট হোয়াটসআপের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।
এছাড়া এ বিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, কৃষকলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে এই সম্মেলনের মাধ্যমে যাতে সিলেট জেলা কৃষকলীগে বিভাজন সৃষ্টি না হয়, সংগঠনের শৃংখলা রক্ষার জন্য বলেন। এমন সম্মেলন হলে সিলেটে অন্যান্য সহযোগী সংগঠনেও এর প্রভাব ফেলবে এবং সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। সকল উপজেলা কৃষকলীগের সম্মেলন করে জেলা কমিটির মাধ্যমে জেলা সম্মেলন করার জন্য কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে তারা পরামর্শ দেন। এর প্রেক্ষিতে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় আঞ্চলিক কমিটির ভার্চুয়াল সভা গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুষ্টিত হয়। সভায় সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ সভাপতি দেওয়ান জয়নাল আবেদীন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শের স্বপক্ষে বক্তব্য দিলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে সিলেট বিভাগের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীমা আক্তার খানম এমপি (শামীমা শাহরিয়ার), দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান মোল্লা ও সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবের যোগসাজশে সিলেট জেলা কৃষকলীগকে ধ্বংস করতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। তাই নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আহমেদুর রব, প্রচার সম্পাদক অব. সার্জেন্ট আবুল হোসেন, বন ও পরিবশ বিষয়ক সম্পাদক খসরু নোমান, সদর উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সেক্রেটারী আঙ্গুর মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক কাচা মিয়া মেম্বার প্রমুখ।