স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমা থেকে ভূয়া দুদক-সিআইডি পরিচয়ধারী প্রতারক মাহমুদ আলীকে (৬৩) অবশেষে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯’র সদস্যরা। গত ২০ ফেব্রুয়ারী রবিবার বিকেলের দিকে নিজ বাড়ী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতের কাছ থেকে এ সময় ২টি ভুয়া আইডি কার্ড, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাগজপত্রের একটি বান্ডিল, ১টি মোবাইল ফোন ও ১টি সিম কার্ড উদ্ধার ওজব্দ করে র্যাব।
ধৃত মাহমুদ আলী সিলেটের দক্ষিণ সুরমার উপজেলার ৩নং তেতলী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বদিকোনা গ্রামের বড়বাড়ির মৃত শহীদল্লাহের পুত্র। সে এক সময় কাঠমিস্ত্রি ছিলো। কখনো সে নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, কখনো পুলিশের ডিবি, কখনো সিআইডি, আবার কখনো বা দুদকের বড় কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বেড়াতো। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে বলে র্যাব জানায়।
র্যাব সূত্র জানায়, মামলা-মোকদ্দমাসহ জায়গা-জমির আইনি সহায়তার নামে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতো প্রতারক মাহমুদ আলী। এ খবর জানতে পেরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯। ধীরে ধীরে তাকে ঘিরে জাল গুটিয়ে আনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিশেষ এই বাহিনী। অবশেষে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার এসএমপি আফসান আল আলম জানান, মাহমুদ আলীর প্রতারণার বিষয়ে তথ্য আসলে র্যাব-৯ এর গোয়েন্দা দল তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারে, সে লোকজনের নিকট বিভিন্ন সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বড় কর্মকর্তা, দুদকের কর্মকর্তা এবং সিআইডির কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন কাজে তদবির করে দেওয়ার নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেন।
মাহমুদ আলীর সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, সে আগে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতো। পরবর্তীতে জমিজমার সার্ভেয়ারের সহযোগী হিসেবে কাজ করার ফলে তার জমিজমা বিষয়ক কিছু ধারণা হয় এবং এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি জমিজমা বিষয়ক সমস্যা সমাধানের কথা বলে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতো। এছাড়া মাহমুদ আলী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডিবি, সিআইডি, দুদকের বড় কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মানুষের কাছে বলে বেড়াতো- ‘আমার কাছে মামলা-মোকদ্দমার সমাধান করা কোনো ব্যাপারই না, তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবো।’ মাহমুদ আলী মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য সিআইডি, দুদকের ভুয়া আইডি কার্ড নিজের সঙ্গে রাখতো এবং লোকজনকে দেখাতেন বলে জানায় র্যাব।
র্যাব আরও জানায়, প্রতারক মাহমুদ আলী নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বড় কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে লোকজনকে বলতেন- যাদের নামে মামলা আছে তাদের বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশন পার করে দেওয়ার ক্ষমতা তার আছে। এই বলে লোকজনের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া ছিলো তার আরেক অপকর্ম। গ্রেফতারের পর জব্দকৃত ভূঁয়া আইডি কার্ড ও কাগজাপত্রসহ মাহমুদ আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরপূর্বক দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব। সোমবার মাহমুদ আলীকে আদালতে প্রেরণ পুলিশ। পরে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।