প্রদীপ ও লিয়াকতের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা চাঞ্চল্যকর মামলায় আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদ-ন্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছেছে। কক্সবাজারের বিচারিক আদালত থেকে হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রীমকোর্টের মুখপত্র ও বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, ‘মেজর সিনহা হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছেছে।’ ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদন্ড দেন তখন ওই দন্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সব নথি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন। যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। ওই নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। পেপারবুক প্রস্তুত হলে মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।
পেপারবুক প্রস্তুত হওয়ার পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপীল শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩২ ধারা বলা হয়েছে, দায়রা জজ ও অতিরিক্ত দায়রা জজের আদালত কোন আসামিকে আইন অনুসারে যে কোন পরিমাণের জরিমানা, যে কোন মেয়াদের কারাদন্ড এবং মৃত্যুদন্ড প্রদান করতে পারে। তবে দায়রা জজ বা অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত থেকে প্রদত্ত মৃত্যুদন্ডের আদেশ অবশ্যই হাইকোর্ট বিভাগ থেকে নিশ্চিত করতে হবে।
ডেথ রেফারেন্স এমন একটি প্রক্রিয়া, যার অধীনে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি নিজ থেকে তার মৃত্যুদন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল না করলেও বিষয়টি স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চ আদালত কর্তৃক নিরীক্ষা করা হয়ে থাকে। বিচারিক আদালতের মৃত্যুদন্ডাদেশে কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে, তা সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এই সংশোধনের কাজ করতে গিয়ে উচ্চ আদালত অধস্তন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত মৃত্যুদন্ডের সাজা বাতিল করে সাজাপ্রাপ্তকে খালাস পর্যন্ত দিতে পারে। একইসঙ্গে সাজা কমানো কিংবা মামলাটির পুনর্বিচারের আদেশও দিতে পারে উচ্চ আদালত।
এর আগে ৩১ জানুয়ারি সিনহা হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত পুলিশের বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়ে রায় দেন। এছাড়া ছয় আসামি সাবেক এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া এপিবিএনের এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মোঃ রাজীব ও মোঃ আব্দুল্লাহ, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, লিটন মিয়া ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেন আদালত।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান। গত শনিবার ৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার কারাগার থেকে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত প্রদীপ কুমার দাশ ও মোঃ লিয়াকত আলীকে বিশেষ ব্যবস্থায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তাদের চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেমড সেলে রাখা হয়েছে।