কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আগামী ১৯ মে এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ১৮ জুলাই আয়োজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া পরীক্ষার সময় ও নম্বর কমানোর সিদ্ধান্তও নেয়া হয়।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির সভাপতিত্বে সম্প্রতি শিক্ষা বোর্ডগুলোর এক ভার্চুয়াল সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সভা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় কমে যাচ্ছে সময় ও নম্বর। ২০২১ সালের মতো এবারও দুই পাবলিক পরীক্ষা তিন ঘণ্টার পরিবর্তে নেয়া হবে দেড় ঘণ্টায়। পরীক্ষায় পূর্ণমান ১০০ নম্বরের পরিবর্তে নির্ধারিত থাকছে ৫০ নম্বর। তবে এবার সব বিষয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর পরীক্ষা নেয়া হবে। ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এবং আইসিটি বিষয় বাদ দিয়ে অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষা হতে পারে।
গত বছর এসএসসি-এইচএসসিতে টেস্ট বা নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়া না হলেও এ বছর চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে হবে টেস্ট পরীক্ষা। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত পুনর্বিন্যস্ত পাঠ্যসূচী (এসএসসি পর্যায়ে ১৫০ দিনের এবং এইচএসসি পর্যায়ে ১৮০ দিনের) অনুযায়ী এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ আবদুস সালাম বলেন, গত ২৪ জানুয়ারি মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে পরীক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর এসএসসি পরীক্ষা আগামী মে মাসে, আর এইচএসসি পরীক্ষা জুলাই মাসে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয় সভায়। তবে করোনা পরিস্থিতির ওপর সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে। তিনি আরও বলেন, এখনও স্কুল-কলেজ বন্ধ। তাই নম্বর ও সময় কমিয়ে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষা নিয়ে অনেক পরিকল্পনাই পরিবর্তন করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এসএসসি ও সমমানের টেস্ট পরীক্ষা ৩ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে হবে। এসএসসির চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ১৯ মে। শেষ হবে ৯ জুন। এইচএসসি ও সমমানের টেস্ট পরীক্ষা শেষ করতে হবে ৭ জুনের মধ্যে। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হবে ১৮ জুলাই। ৩১ আগষ্ট শেষ হবে এই পরীক্ষা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ বলেন, দুই পাবলিক পরীক্ষায় নম্বর ও সময় কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। আইসিটি বিষয়টি বাদ দেয়া হয়েছে এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষার ক্ষেত্রে। এ ছাড়া প্রতিটি বিষয়ে নম্বর ও সময় কমিয়ে পৃথক পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
সভা সূত্র আরও জানায়, এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানে প্রতিটি বিষয়ে পরীক্ষার পূর্ণমান হবে ৫০ নম্বর। পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময় থাকবে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ের নম্বর বণ্টনের ক্ষেত্রে বাংলা প্রথম পত্রে এমসিকিউ অংশে ২০ নম্বরে এবং লিখিত অংশে ৩০ নম্বরে পরীক্ষা নেয়া হবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্রে রচনামূলক অংশে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে দুই পাবলিক পরীক্ষায় বাংলা প্রথম পত্রে লিখিত অংশের ছয়টি প্রশ্নের মধ্যে যেকোনো তিনটির উত্তর দিতে হবে। যে সব বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেই, সেগুলোর লিখিত অংশে ১১টি প্রশ্নের মধ্যে যে কোন চারটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা রয়েছে-এমন বিষয়ে লিখিত অংশে আটটি প্রশ্নের মধ্যে যে কোন তিনটির উত্তর দিতে হবে।
এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত এ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই সভায়।