কাজিরবাজার ডেস্ক :
আজ সোমবার ষষ্ঠ ধাপে দেশের ২১৯ ইউপিতে ভোট। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ফল ঘোষণা করা হবে। এদিকে, ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের মাধ্যমে তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে বলে ইসি থেকে জানানো হয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন তাদের মেয়াদের একেবারে শেষপ্রান্তে এসে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মতো শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করে উদাহরণ সৃষ্টি করে যেতে চায়। এ জন্য আজকের ভোট কঠোর পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে রবিবার থেকেই প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা কঠোর নিরাপত্তাবলয়ে আনা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে রবিবার দুপুরের মধ্যেই নির্বাচনী সামগ্রী পাঠিয়ে দেয়া হয়। বিভিন্ন মহল থেকে আগের পাঁচ ধাপের মতো এবারও ইউপি নির্বাচনের দিন সহিংসতার আশঙ্কা করা হয়েছে। কারণ, সর্বশেষ ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের নির্বাচনের দিন সহিংস ঘটনায় ছয়জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ওই দিন সহিংসতায় জড়িত থাকায় পুলিশ আটক করে দুই শতাধিক মানুষকে। তবে আজকের ভোটগ্রহণ ও গণনাকালে যাতে সেই পরিস্থিতি না হয়, সে জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আজকের ভোটগ্রহণকালে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ জন করে সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। সব ইউপিতে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে একটি করে মোবাইল ফোর্স টিম এবং প্রতি তিনটি ইউপিতে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স টিম মোতায়েন রয়েছে। আর প্রতিটি উপজেলায় র্যাবের দুটি মোবাইল টিম ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স টিম, বিজিবির দুটি মোবাইল ফোর্স টিম ও একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স টিম দায়িত্ব পালন করছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, আজকের ইউপি নির্বাচনে ভোটগ্রহণকালে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মনিটরিং সেলের কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে পরিচালিত হচ্ছে। এ সেলের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে-১. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে অবগত করা। ২. সেলে অন্তর্ভুক্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচন উপলক্ষে মোতায়েন করা আইনশৃঙ্খলা সদস্যদের অবস্থা ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানানো। ৩. সংস্থার নিজস্ব যোগাযোগ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কমিশনের নির্দেশনা তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করা এবং ৪. ভোটকেন্দ্র বা নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় করা। বিভিন্ন নির্বাচনী মালামাল পরিবহন, বিতরণ এবং ভোটগ্রহণ কাজে নিরাপত্তা বিধানের জন্য মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় করে রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও প্রিসাইডিং অফিসারদের সহায়তা দেয়া।
এর আগে সারাদেশে পাঁচ ধাপে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। গত বছর ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর দুই পর্বে প্রথম ধাপের ৩৬৯টি ইউপিতে এবং ১১ নবেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৮ নবেম্বর তৃতীয় ধাপে এক হাজার সাত ইউপিতে, ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে ৮৪০টি ইউপিতে এবং এ বছর ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে ৭০৭ ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।