কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপির বিরোধিতা উপেক্ষা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে এর আগে গঠিত সব নির্বাচন কমিশনের বৈধতা দেয়ার পাশাপাশি কমিটির কাজ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বন্ধ করে ইসি গঠনের বিল সংসদে উঠেছে। একই সঙ্গে আগে গঠিত সব নির্বাচন কমিশনের বৈধতা দেয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে।
২০১২ এবং ২০১৭ সালে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি ইসি নিয়োগ করেছিলেন, সে প্রক্রিয়াই আইনের অধীনে আনা হচ্ছে এই বিলের মাধ্যমে। প্রস্তাবিত এই আইনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যতা-অযোগ্যতাও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ ৫০ বছরে যে কাজটি হয়নি, এই বিলটি পাসের মাধ্যমে সরকার সেই কাজটি করতে যাচ্ছে।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে রবিবার চলতি সংসদের ১৬তম অধিবেশন (শীতকালীন) আবারও শুরু হয়। অধিবেশনে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ সংসদে উত্থাপনের প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মোঃ হারুনুর রশীদ বিলটিকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ বলে মন্তব্য করেন।
জবাবে সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে ও জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই ওই বিলটি আনা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিএনপির প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায় এবং মন্ত্রী বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতোপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলী এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত বিষয়ে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’
খসড়া আইনে সার্চ কমিটির কাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বেঁধে দেয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। এ অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুইজন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটি গঠনের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে দেবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘প্রস্তাবিত বিলটি আইনে পরিণত হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদান স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে, গণতন্ত্র সুসংহত ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে এবং জনস্বার্থ সমুন্নত হবে মর্মে আশা করা যায়।’
বিরোধিতায় যা বললেন বিএনপির এমপি : বিলটি সংসদে উত্থাপনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বিএনপির সংসদীয় দলের নেতা মোঃ হারুনুর রশীদ বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি জনগণের প্রত্যাশা, রাজনৈতিক দলগুলোর এবং সুশীল সমাজের প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আমরা দীর্ঘদিন যাবত, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য একটি আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু যে বিলটি উত্থাপন করতে চাইছেন, সেই বিল সম্পর্কে ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলা হয়েছে ‘যাহা লাউ তাহাই কদু’।
সার্চ কমিটির প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে এমপি হারুন বলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত বিগত দু’টি নির্বাচন কমিশন, নকিব ও হুদা কমিশন নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অথচ নতুন আইনে ইতোপূর্বে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত দুটি কমিশনকে বৈধতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এখানে নতুনত্ব কিছু নেই। ইতোপূর্বে যে কমিশন গঠিত হয়েছে তার অনুরূপ বিল এখানে তোলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই আইনটি প্রশ্নবিদ্ধ। এই আইন দিয়ে বর্তমান সঙ্কটের নিরসন হবে না। সঙ্কট থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব না। আমি দাবি করব আইনটি প্রত্যাহার করুন। আইনমন্ত্রী কিছুদিন আগে বলেছিলেন এরকম একটি আইন প্রণয়নের জন্য রাজনৈতিক দল ও সুধীসমাজের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এই কথা বলার পর তিনি কী করে এই আইনটি আনেন।
জবাবে আইন মন্ত্রী যা বললেন : বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যের বক্তব্যের জবাব দিতে উঠে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিএনপি নিজেরা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য যতরকম কারসাজি- বিচারপতি আজিজ সাহেবকে দিয়ে কমিশন গঠন, এক কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি, একজন ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার জন্য বিচারকদের বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ করেছিলেন। এটা উনারা কার সঙ্গে আলোচনা করে করেছিলেন? উনারা এখানে বসে নিজেরা-নিজেরা করে ফেলেছিলেন। ওনারা কারও সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন মনে করেননি।
তিনি বলেন, কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার জন্য উনারা (বিএনপি) নিরবচ্ছিন্ন ইলেকশন করতে চেয়েছিলেন। মানে কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার জন্য। উনারা ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচন করতে চাইলেও জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করে। তিনি আরও বলেন, আজ বিরোধিতা করলেও তারা সংবিধানের আলোকে বিলটি প্রণয়নের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখন অন্যকিছু না পেয়ে উনারা এইটা নাই, ওইটা নাই বলে নাচ-গান শুরু করেছেন। দীর্ঘ ৫০ বছরে যে কাজটি হয়নি, এই বিলটি পাসের মাধ্যমে সরকার সেই কাজটি করতে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী বলেন, সংবিধানে বলা আছে, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করতে হবে। আমরা সেই আইন করেছি। উনারা বুঝে বলুক না বুঝে বলুক, বলছেন এটা সার্চ কমিটির আইন। উনারা বলছেন আইনটা আমরা ঠিক করিনি। উনাদের সঙ্গে আলোচনা করিনি। তিনি বলেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এনজিও আমার কাছে একটি ড্রাফট দিয়েছিল। যখন আমি বলেছিলাম, কোভিড সিচুয়েশনের জন্য এই সংসদে পাস করা সম্ভব হবে না। অন্য কিছু না, কোভিড সিচুয়েশনের জন্য। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালেই বলেছিলেন এই আইন করা প্রয়োজন। উনারা বলেছিলেন অর্ডিন্যান্স করে আইন করে দিতে হবে। আমি বলেছিলাম এই আইন সংসদে না এনে করা ঠিক হবে না। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে তারপরে সংসদে করা উচিত।
সার্চ কমিটি গঠনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের উদ্যোগের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আনিসুল হক বলেন, তখন একটা কনসেনশাস হয়েছিল। তখন গেজেট হলো। নির্বাচন কমিশন গঠন হলো। পরেরবার আবার একইভাবে হলো। এটা আইন ছিল না, কিন্তু এটা ছিল ফোর্স অব ল’। কারণ এটি রাষ্ট্রপ্রধান করেছিলেন। রাষ্ট্রপ্রধানের চেয়ে বড় কেউ না। তখন বিএনপির আপত্তি ছিল না। তিনি আরও বলেন, উইদাউট প্রেজুডিস বলছি, যদি কোন নির্বাচন কমিশনার কোন অন্যায় করে থাকে, তাহলে কী তাকে এই আইনের নয় দফায় ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে?
আইনমন্ত্রী বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি যে দুবার সার্চ কমিটি করেছেন, সেটাও আইনসিদ্ধ ছিল। সেটাও আইনের আওতায় আনা হলো। এটা কনসেনশাসের ভিত্তিতে করা হয়েছিল। উনাদের কথা হচ্ছে, যা করেন করেন, তাল গাছটা আমার! কিন্তু তাল গাছ উনাদের না। তাল গাছ জনগণের। উনারা না বুঝে বলছেন। আইনটা যখন করে ফেললাম, পালের হাওয়া চলে গেছে। সেজন্য এখন কী বলবেন? এইটা নাই, ওইটা আছে। ওইটা নাই, এসব নাচ-গান শুরু করে দিয়েছেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, উনারা (বিএনপি) চান উনাদের পকেটে যে নাম সেই নাম দিয়ে ইসি গঠন হবে। সেটা হবে না। এটা বাংলাদেশ। জনগণ ঠিক করবে। কোন দল অগ্রাধিকার পাবে না। এ আইনের মধ্যে ইসি গঠন হলে বিএনপি ‘ভোট চুরি’ করতে পারবে না বলে সেজন্য তাদের ‘গাত্রদাহ’ শুরু হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সার্চ কমিটির গঠন খসড়া আইন থেকে তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, চারজন সাংবিধানিক পদের অধিকারী। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ইচ্ছা করলেও চাকরিচ্যুত করতে পারবেন না। মহামান্য রাষ্ট্রপতি পছন্দ না করলেও দশজনের ভেতরে তাকে থাকতে হবে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অনিয়মের বিচারের জন্য বিএনপি এমপির দাবি প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, আগে আজিজ কমিশনের বিচার করতে হবে। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটারের বিচার করতে হবে। এত তাড়াতাড়ি তিনতলায় ওঠা যাবে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি কোথাও ‘এরকম স্বচ্ছ ইসি’ গঠনের নিয়ম নেই বলেও উল্লেখ করেন।
যা থাকছে ইসি গঠনের আইনে : নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাবিত আইনে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের যোগ্যতা নির্ধারণ ও এর পাশাপাশি সার্চ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে ইতোপূর্বে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি নিয়োগের বৈধতা দেয়া হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতোপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলী এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত বিষয়ে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’
সিইসি ও ইসি হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা : সিইসি ও ইসি পদে কোন ব্যক্তিকে সুপারিশ করার ক্ষেত্রে তিনটি যোগ্যতার কথা বলা হয়েছে সংসদে উত্থাপিত বিলে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, ন্যূনতম ৫০ বছর বয়স হতে হবে এবং কোন গুরুত্বপূর্ণ সরকারী, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারী বা বেসরকারী পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।’
বিলে সিইসি ও ইসি পদের জন্য ছয়টি অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যদি আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন। দেউলিয়া হওয়ার পর দায় হতে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন। কোন বিদেশী রাষ্ট্র্রের নাগরিকত্ব নেন বা বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন। নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) এ্যাক্ট-১৯৭৩ বা বাংলাদেশ কোলাবরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার-১৯৭২ এর অধীনে কোন অপরাধে জন্য দন্ডিত হয়ে থাকেন। আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না, এমন পদ ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।’
সার্চ কমিটি : রাষ্ট্রপতি সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশের জন্য ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি (অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্চ কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে বলে বিলে বলা হয়েছে। এই কমিটির সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপীল বিভাগের একজন বিচারক। সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারী কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুইজন বিশিষ্ট নাগরিক। তিন সদস্যের উপস্থিতিতে কমিটির সভার কোরাম হবে।
সার্চ কমিটি সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, এই কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বর্ণিত যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। এই অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও ইসিদের প্রতি পদের জন্য দুই জন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটির গঠনের দশ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে দেবে।
উল্লেখ্য. সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য বিলটি আনা হয়েছে। সংবিধানে আইন প্রণয়ন করে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা থাকলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরে এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন হয়নি। রাষ্ট্রপতি তার সাংবিধানিক ক্ষমতার অংশ হিসেবে ইসি নিয়োগ দিয়ে আসছেন। অবশ্য সর্বশেষ দুটি কমিশন নিয়োগের সময় রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলের মতামত নেয়ার পাশাপাশি সার্চ কমিটি গঠন করে ইসি গঠন করেন। প্রস্তাবিত আইনেও সার্চ কমিটি গঠনের বিধান থাকছে। বিলটি পাস হওয়ার পরেই নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ করা হবে।