কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের মেয়াদে জেলা পরিষদে ভোট আয়োজন করতে পারছে না।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমান কমিশনের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।
এক্ষেত্রে জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য তাদের হাতে পর্যাপ্ত সময় নেই। কেননা, স্থানীয় এই সরকারে নির্বাচন করতে হলে আগে সংশ্লিষ্ট জেলার অধীনস্ত অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচন শেষ করতে হয়। এক্ষেত্রে উপজেলা ও পৌরসভার প্রায় সব নির্বাচন শেষ হলেও, ইউপি নির্বাচন শেষ হয়নি, হবেও না।
কমিশন প্রথমে সব নির্বাচন উপযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ভোট শেষ করতে চাইলেও সময়ের অভাবে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। এরপর জেলা পরিষদ নির্বাচন আয়োাজেনের সিদ্ধান্ত নেয়। অর্থাৎ যেসব জেলার সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন শেষ হয়েছে, সেগুলোয় জেলা পরিষদ নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু সে সিদ্ধান্তও বাস্তবায়ন করতে পারছে না বর্তমান ইসি। এছাড়া তারা দায়িত্ব ছাড়ার আগে তফসিল ঘোষণা করেও যেতে পারবে না।
ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার জানান, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৭৩টি ইউপিতে ভোট সম্পন্ন হয়েছে। তফসিল দেওয়া হয়েছে ৪ হাজার ১৩৮টি ইউপিতে। মোট ইউপি ৪ হাজার ৫৭৪টি। তার মধ্যে ৪৩৬টি ইউপি নিয়ে মামলা ও সীমানা জটিলতা থাকায় নির্বাচন করা যায়নি।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো জেলাতেই সব স্থানীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়নি। সব জেলাতেই কোনো না কোনো স্থানীয় সরকারের ভোট বাকি রয়েছে। তাই জেলা ভিত্তিক জেলা পরিষদ নির্বাচন করা যাবে না। এছাড়া বর্তমান কমিশন তফসিল দিয়ে যাবে, সেটাও সম্ভব নয়। তাই আগামী দু’মাসে এ নির্বাচন করা দুরূহ। আবার এ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে কোনো নথিও উপস্থাপন করার জন্য এখনও বলেনি কমিশন। তাই খুব দেরি না হলেও এখনই এ নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
জানা গেছে, ২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নতুন করে জেলা পরিষদ আইন করে। এরপর জোট সরকারের আমলে এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করে। এরপর প্রথমবারের মতো স্থানীয় এই সরকারে নির্বাচন হয় ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর।
সে সময় ৬১টি জেলায় (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) নির্বাচন হয়েছিল। এরমধ্যে ১৯টি জেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আইন অনুযায়ী, সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র এবং কাউন্সিলর বা সদস্যরা ভোট দিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও ৫ জন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত করে থাকেন।