কাজিরবাজার ডেস্ক :
আজ রবিবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নির্বাচন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্র কেন্দ্রে গণনার পর ফল ঘোষণা করা হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট সব কেন্দ্রের ভোটের হিসেব যোগ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা মেয়র ও কাউন্সিলর পদে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করবেন। এবারের নাসিক নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ একেবারে শেষ প্রান্তে থাকায় এ নির্বাচন তাদের জন্য অগ্নিপরীক্ষা। তাই নাসিক নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা জোরদার করেছে। এরই অংশ হিসেবে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে সমগ্র সিটি কর্পোরেশন এলাকা। এ পরিস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশ প্রত্যাশা করছে নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, রবিবার নাসিক নির্বাচনে ২৭ ওয়ার্ডের ১৯২ ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে। মোট ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৩৩টি। এবারের নির্বাচনে ভোটার ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। ২০১৬ সালে ভোটার ছিলেন ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। সে অনুযায়ী নতুন ভোটার ৪২ হাজার ৪৩০ জন। আর এবার নারী ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৯ জন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে আইভীর সঙ্গে বিএনপির প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ছিল প্রায় ৮০ হাজার। আইভী পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোট, আর বিএনপির সাখাওয়াত হোসেন খান পেয়েছিলেন ৯৬ হাজার।
এবার নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন ৭জন। এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন ১৪৫ জন প্রার্থী। মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন- আগের দুইবারের মেয়র আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা), স্বতন্ত্র থেকে বিএনপির সাবেক নেতা তৈমূর আলম খন্দকার (হাতি), খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেওয়াল ঘড়ি), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মোঃ রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মোঃ মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মোঃ জসীম উদ্দিন (বটগাছ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া)।
২০১১ সালে সিটি কর্পোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এবার নাসিকের তৃতীয় নির্বাচন হচ্ছে । গত ৩০ নবেম্বর নাসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আজ রবিবার সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট। এর আগে শুক্রবার সব কেন্দ্রে ইভিএমে মক ভোটের মহড়া হয়েছে। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর দ্বিতীয় নাসিক নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ভোট হয় ব্যালট পেপারে। আর ২০১১ সালে প্রথম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে ভোট হয় ইভিএমে, আর অন্যান্য কেন্দ্রে ভোট হয় ব্যালট পেপারে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নাসিক নির্বাচনই শেষ বড় কোন নির্বাচন। তাই এ নির্বাচনকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছে কমিশন। তাই এবার স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা নারায়ণগঞ্জে গিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেছেন। প্রার্থী ও ভোটারদের জন্য নিয়েছেন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তিনি বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যা যা করা প্রয়োজন সবই করা হয়েছে। তাই নাসিক নির্বাচন একটি মডেল নির্বাচন হিসেবে উদাহরণ হয়ে থাকবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পর নাসিক নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে ইতোমধ্যেই কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে আনা হয়েছে পুরো নির্বাচনী এলাকা। র্যা ব, বিজিবি, পুলিশের স্পেশাল টিম রবোকপ, সাধারণ পুলিশ, আর্মড পুলিশ, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার টিম মাঠে নেমেছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে সমগ্র নারায়ণগঞ্জ এলাকা।
নাসিক নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ১৯২টি ভোট কেন্দ্র ও কেন্দ্রের বাইরের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ হাজারের বেশি সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। প্রতিটি কেন্দ্রে থাকছে ২৬ জন ফোর্স। এর বাইরে থাকবে পুলিশ ও র্যা বের স্ট্রাইকিং ফোর্স। কোথাও কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ত্বরিত ব্যবস্থা নেবেন। ২৭টি ওয়ার্ডে নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে ৩০টি মোবাইল কোর্ট কাজ করছে। এ ছাড়া ২০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মাঠে কাজ করছে। প্রতি ওয়ার্ডে রয়েছে র্যা বের একটি করে টিম। পুলিশ থাকছে ৩ হাজারেরও বেশি। এছাড়াও পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে ৭৬টি, যার প্রতি টিমে সদস্য থাকবে পাঁচজন। আর র্যা বের টিম থাকবে ৬৫টি।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তাই নাসিক নির্বাচন নিয়ে কোন প্রকার আশঙ্কা নেই। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ১৯২টি ভোট কেন্দ্রকেই গুরুত্বসহকারে দেখছি। ৪টি বাহিনীর সদস্য নিয়ে নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করেছি। তাই ভোটাররা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারবেন। তবে করোনা বিধিনিষেধ মেনেই সবাইকে ভোট দিতে হবে। মাস্ক বাধ্যতামূলক, হ্যান্ডস্যানিটাইজার এবং অন্যান্য যে সুরক্ষা সামগ্রী আছে তা প্রতিটি কেন্দ্রেই থাকবে।
শনিবার প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারের কোন সুযোগ না থাকলেও ফোনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা সারাক্ষণ কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। এ ছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে কারা কারা এজেন্ট হবেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আবার নিজেদের অনেক কর্মী-সমর্থক প্রার্থীদের বাসায় গিয়েও যোগাযোগ করেছেন।
এদিকে শনিবার সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রতিটি অলি-গলি ও রাজপথের মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভ্রাম্যমাণ টিমগুলোও সমগ্র শহরে মহড়া দেয়। কোথাও কয়েকজনের জটলা দেখলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে গিয়ে কারণ জানতে চায়।
শনিবার দিনভর নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে সকল জল্পনা-কল্পনা ছিল নাসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। কে হচ্ছেন মেয়র আর কে হচ্ছেন কাউন্সিলর এ নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে ছিল টানটান উত্তেজনা। তবে শেষ মুহর্তে অধিকাংশ প্রার্থীই ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণে কৌশল পরিবর্তন করেন। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রের আশপাশে কর্মী-সমর্থকদের বেশি উপস্থিতি কিভাবে নিশ্চিত করা যায় এবং কিভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা যায় সে জন্যও প্রার্থীরা নিজ নিজ কৌশল কাজে লাগিয়েছেন।
দেশে আবার করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভোটের দিন সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকারী বিধিনিষেধ জারি করার পরও তা উপেক্ষা করে নাসিক নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা গণসংযোগ করতে পারলেও প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এবার নারায়ণগঞ্জের ভোটাররা বুঝেশুনেই ভোট দেবেন। মহানগরের উন্নয়নের জন্য যারা অধিকতর যোগ্য তাদেরই তারা মেয়র ও কাউন্সিলর হিসেবে বেছে নেবেন। তবে মেয়র পদে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সমীকরণ ভোটের ফলে প্রভাব ফেলতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে- প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, রাজনৈতিক অবস্থান, নিজস্ব ভোট ব্যাংক, নিজ নিজ দলীয় ভোট, নতুন ভোট, নারী ভোট, ওসমান পরিবারের গতিবিধি, হেফাজত সমর্থিত ভোট, জামায়াতের ভোট, সংখ্যালঘুদের ভোট, শ্রমিক- হকার ও দল না করা ভাসমান ভোট।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে কাজ করলেও ওই সিটির ওসমান পরিবারের লোকজন সরাসরি কাজ করছেন না। আর আইভীও চাননি তারা সরাসরি তার পক্ষে কাজ করুক। এ কারণে ওসমান পরিবারপন্থী আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী আইভীর পক্ষে সরাসরি নেই। বিশেষ করে সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করায় পুরো নারায়ণগঞ্জের বিপুল সংখ্যক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আইভীর প্রতি ক্ষুব্ধ হন। শেষ মুহূর্তে তাদের মান ভাঙ্গানোর চেষ্টা করেছেন আইভীপন্থীরা। তবে আজ ভোটের দিন তারা সবাই আইভীর পক্ষে সরাসরি কাজ করবেন কিনা সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি থাকবে আইভীপন্থী নেতাকর্মীদের। তবে আইভী সমর্থকরা মনে করছেন শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের ভোট, সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের ভোট এবং বিএনপির বিদ্রোহী একাংশের ভোট নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী পাবেন।
অপরদিকে এবার নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করায় তৈমুর আলম খন্দকারকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়টি দলের কৌশলী সিদ্ধান্ত। শেষ পর্যন্ত বিএনপি সমর্থকরা দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশনা মেনে তৈমুর আলম খন্দকারকেই ভোট দেবেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের ভোট এবং জামায়াত ও হেফাজতের ভোট তৈমুরই পাবেন বলে আশা করছেন।
পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকার অতি নিকটের নাসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার ও বিরোধী পক্ষ সবাই গভীর আগ্রহে এ নির্বাচনের দিকে চোখ রেখেছে। এ নির্বাচনের ফল কি হয় তা দেখার জন্য সবাই অপেক্ষা করছেন। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন নিজেদের ইমেজ ধরে রাখতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করে দেশবাসীর বাহবা নিতে চায়। এ কারণেই নির্বাচন কমিশন এ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
এদিকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীই বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, আমি মনে করি, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, সুন্দর ও স্বাভাবিক হবে। আমি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। নির্বাচনে স্বাভাবিক পরিবেশ যেন বজায় থাকে। ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাব আপনারা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বলতে চাই ভোট শুরুর আগে সকাল থেকেই যেন উৎসবমুখর একটা পরিবেশ থাকে। তিনি বলেন, মেয়র থাকা অবস্থায় অনেকগুলো কাজই চলমান রেখে এসেছিলাম। বিজয়ী হলে একসঙ্গে অনেক কাজই করতে হবে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেব কদমরসূল ব্রিজে। আর ৬টি মেগা প্রজেক্ট চলমান ছিল। এই প্রজেক্টগুলো শেষ করব। আমি অসম্পূর্ণ কাজগুলো চলমান রাখতে চাই। আমি কখনও কোন অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। দল মতের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করেছি। আর সব সময় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। তাই আশা করছি নারায়ণগঞ্জবাসী আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।
হাতী প্রতীকের মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, অতীতে নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য জীবনবাজি রেখে কাজ করেছি। তাই এবার মেয়র পদে আমাকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করছি আমি লক্ষাধিক ভোটে পাস করব। বিজয়ী করলে নারায়ণগঞ্জ শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সেতুর উন্নয়নে কাজ করব। এছাড়া জলাবদ্ধতা দূর করাসহ মশা-মাছি ও যানজট নিরসনসহ মহানগরের উন্নয়নে কাজ করব। তবে সবকিছুই করব নাগরিকদের পরামর্শ নিয়ে। তিনি বলেন, আগে একবার দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে ভোটের দিন মাঠ ছাড়লেও এবার মরে গেলেও ভোটের মাঠ ছাড়ব না।
কেন্দ্রে কেন্দ্রে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি : নাসিক নির্বাচনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা। এ বিষয়ে তিনি প্রতিটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে হ্যান্ডস্যানিটাইজার রাখতেও বলেছেন তিনি। আর মাস্ক ছাড়া কাউকে কেন্দ্রে কিংবা নির্বাচনের বুথে ঢুকতে না দেয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মাহফুজা আক্তারও জানিয়ে দিয়েছেন মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখাসহ সাধারণ যে স্বাস্থ্যবিধি তাই মেনে ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে হবে। এ নির্দেশনা পেয়ে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরাও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে ভোটারদের পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা যায়।
নাসিক নির্বাচনে ইসির মনিটরিং সেল : নাসিক নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির স্মার্টকার্ড প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আবুল কাশেম মোঃ ফজলুল কাদেরের নেতৃত্বে গঠিত ওই সেলে আরও চারজন সদস্য রাখা হয়েছে। এতে রয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার বা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা, বিজিবি বা র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বা আনসার ও ভিডিপির উপপরিচালক পদমর্যাদার একজন ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বা সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। তারা ভোটের দিন সার্বিক পরিস্থিতি মনিটর করবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া চলাচলে নিষেধাজ্ঞা : আজ রবিবার ভোটের দিন নারায়ণগঞ্জ শহরে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ জায়েদুল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ভোটের দিন নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ চলাচল করতে পারবেন না। এছাড়া ভোটের দিন কোন বহিরাগতকে নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের তরফ থেকে নাসিক নির্বাচনে সহিংসতার কোন আশঙ্কা নেই।