ওমিক্রন পরবর্তী করোনা মহামারি পর্যায়ে থাকবে না

5

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ঢেউয়ের পর আগামী সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ করোনা ভাইরাস বিশ্ব থেকে মহামারি অবস্থা থেকে দুর্বল পর্যায়ে চলে যাবে বলে মনে করছেন অণুজীব বিজ্ঞানী এবং স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি বিশেষজ্ঞদের কাছে করোনার ওমিক্রন ধরনের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এ কথা জানান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন করোনা যে পর্যায়ে রয়েছে, তাতে এ ভাইরাস ধীরে ধীরে সাধারণ ফ্লু (জ্বর) জাতীয় আঞ্চলিক রোগে পরিণত হচ্ছে। ফলে করোনার নতুন ধরনে কেউ আক্রান্ত হলেও তিনি বেশি মারাত্মক অসুস্থ হচ্ছেন না। তবে করোনা একেবারে আমাদের মাঝ থেকে চিরতরে বিদায় নেবে না, মাঝে মাঝেই বছরের বিভিন্ন সময়ে ফ্লুর মতো করে বারবার ফিরে আসবে বলেও বিশেষজ্ঞদের মত।
বিশিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী এ বিষয়ে বলেন, ওমিক্রনের তীব্রতার দেশ ভেদে পার্থক্য রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় দ্রুত করোনার সংক্রমণ বেড়ে আবার কমে গেল। সেখানে ওমিক্রনের তীব্রতার বেশি দেখা গেল না। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বে তীব্রতা বেশি দেখা যাচ্ছে। কারণ এসব অঞ্চলে বয়স্ক লোক বেশি, আবার এখানে সচেতনভাবে করোনা অ্যান্টি ভ্যাকসিন অনেক গ্রুপ রয়েছে, ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি এমন অনেক লোক রয়েছে, যাদের আবার বিভিন্ন কোমরবিটি রোগও আছে। তাই এখানে করোনার তীব্রতা আরেক রকম দেখা যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যাচ্ছে আমাদের ক্ষেত্রে তীব্রতা কমই হবে বলে আশা করছি।
এ চিকিৎসা বিজ্ঞানী আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে বিশ্বের অনেকেই এখন ভাবছেন এই অমিক্রন হয়তো আমাদের মহামারি পর্যায় থেকে স্থানীয় পর্যায়ের গুচ্ছ গুচ্ছ সংক্রমণে রূপান্তরিত হবে।
বিশিষ্ট অণুজীব বিজ্ঞানী এবং গণবিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল এ বিষয়ে বলেন, বর্তমানে ওমিক্রনের যে প্রভাব, প্রসার ও বিস্তার এবং গত দুই বছরে সারা পৃথিবীর মানুষের শরীরে যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে। অনেক দেশে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, আবার অনেক দেশে যেমন আফ্রিকাতে ভ্যাকসিন দেওয়া না হলেও অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের শরীরেও যথেস্ট এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। ফলে সব কিছু মিলে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, অমিক্রন যখন শেষ হয়ে যাবে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আমরামহামারি থেকেঅসেকটাই স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে যাব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জায়গায় জায়গায় ইনফেকশন থাকবে, ফ্লু ভাইরাসের মত করে করোনা ফিরে ফিরে আসবে। বছরে একবার বা দুই বছরে একবার ফিরে ফিরে আসবে। একেবারে নিশ্চিহ্ন হবে না।
এ অণুজীব বিজ্ঞানী আরও বলেন, ২০০৩ সালে সার্স কোভ-১ কে আমরা যেমন একেবারে নিশ্চিহ্ন করেছিলাম, তবে ২০২০ সালের কোভিড-১৯ কে একেবারে নিশ্চিহ্ন করা গেল না। কোভিড ১৯ এণ্ডামিক হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে থেকে যাবে।