স্পোর্টস ডেস্ক :
ভারতীয় ক্রিকেটে অন্দরে সংকট সত্যি সত্যি কঠিন আকার ধারণ করেছে। অধিনায়ক বিতর্ক নিয়ে গত প্রায় দুই মাস জেরবার পুরো ভারতীয় ক্রিকেটাঙ্গন। এবার সেটাকে আরও সংকটের মধ্যে ঠেলে দিলেন খোদ বিরাট কোহলি। কারণ, হঠা করেই তিনি ঘোষণা দিয়েছেন ভারতীয় টেস্ট দলের আর অধিনায়কত্ব করবেন না।
অর্থ্যাৎ, হঠাৎ করেই ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন কোহলি। এর আগে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের অধিনায়কত্ব থেকে কোহলিকে সরিয়ে দায়িত্ব দেয়া হয় রোহিত শর্মাকে।
এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য দল ঘোষণা করার সময় হঠাৎ করেই ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব থেকেও সরিয়ে দেয়া হয় কোহলিকে। দায়িত্ব দেয়া হয় রোহিত শর্মাকে। এ নিয়েই তুমুল বিতর্ক জমে ওঠে ভারতীয় ক্রিকেটে। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারের পরদিনই টেস্ট নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন তিনি।
সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট জয়ের পর ঐতিহাসিক সিরিজ জয়েরও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল তাদের। প্রোটিয়াদের মাটিতে আগে কখনোই টেস্ট সিরিজ জেতেনি ভারতীয়রা। এবার ছিল সেই সুবর্ণ সুযোগ; কিন্তু জোহানেসবার্গ এবং কেপটাউনে পরপর দুই টেস্ট হেরে সেই ইতিহাস গড়া সম্ভব হয়নি ভারতীয়দের।
তবে কেপটাউন টেস্টের শেষ দিন ডিআরএস বিতর্কে দারুণ সমালোচনার শিকার হতে হয়েছিল কোহলিকে। তাছাড়া সিরিজ পরাজয়ের জন্য সুনিল গাভাস্কার থেকে শুরু করে অনেকেই তীক্ষ্ম ভাষায় সমালোচনা করেন কোহলির। এবার হঠাৎ করে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়ে যেন সেই সমালোচনারই তীব্র জবাব দিলেন বিরাট।
২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতীয় দলের টেস্ট অধিনায়কত্বের ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন কোহলি। সাত বছর টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেয়ার পথে সর্বশেষ দায়িত্ব পালন করলেন কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে।
অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন কোহলি। সেখানে লিখেছেন, ‘৭টি বছর ধরে প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম এবং নিরলস অধ্যবসায় দিয়ে আমি চেষ্টা করেছি দলকে একটা সঠিক অবস্থানের ওপর ধরে রাখতে। প্রতিটি জিনিসকেই কোনো না কোনো একটা সময়ে এসে থামতে হয়। আমার ক্ষেত্রে ভারতের হয়ে টেস্ট অধিনায়কত্বের বিষয়টা তেমনই। এখনই সময় (অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর)।’
কোহলির অধীনে সবচেয়ে বেশি, ৬৮টি টেস্ট খেলেছে ভারত। এর মধ্যে তার অধীনে জয়ও বেশি। ৪০টি ম্যাচে জিতেছে ভারত। হেরেছে ১৭টিতে এবং ড্র করেছে ১১টিতে। কোহলির জয়ের হার ৫৮.৮২ ভাগ। যা মহেন্দ্র সিং ধোনি কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলিদের চেয়েও বেশি।
কোহলির অধীনেই টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিল ভারত। জিতেছিল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি। তবে, আইসিসি প্রবর্তিত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে শিরোপা বঞ্চিত থাকতে হয় তাদের।