কাজিরবাজার ডেস্ক :
আর কোন হায়েনার দল যাতে এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আছে জানি। এগুলো আমি মাথায়ও রাখি না, আমি বিভ্রান্তও নই। কারণ আমরা সারাজীবন দেখেছি এটা হচ্ছে, এটা হবেই। কিন্তু নীতি-আদর্শ নিয়ে চললে আর সৎ পথে চললে যে কোন বাধা অতিক্রম করা যায়, সেটাই আমরা প্রমাণ করেছি। এখন কেউ আমাদের করুণা করতে সাহস পায় না, বরং আমাদের সমীহ করে চলে। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। খেয়াল রাখবে, লোভের বশবর্তী হয়ে পা পিছলে পড়ে যেও না। শিক্ষায় মনোনিবেশ করে তোমাদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মেলাতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে এখন থেকেই নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ৪র্থ বিপ্লব আসবে, প্রযুক্তির এই যুগে মানুষের কর্মদক্ষতারও পরিবর্তন ঘটবে এবং তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এখন থেকে তৈরি হতে হবে।
বুধবার দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্রলীগের মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় সভাপতিত্ব করেন। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর পরই জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের শহীদসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মাতৃভূমি পাঠাগার’ উদ্বোধন করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর কেন সবাই থমকে গেল সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন উল্লেখ করে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, যে জাতি এক নেতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। সেই নেতাকে যখন তাঁর পরিবারসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হলো সে প্রশ্নের জবাব কখনও খুঁজে পাইনি। তবে হয়ত পাব। অবশ্য কিছু লোক বিভ্রান্ত হলেও মূল দল আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সব সময় সোচ্চার ও সক্রিয় ছিল।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশ গড়ে তুলেছিলেন, যা স্বাধীনতাবিরোধী ও যেসব বড় দেশ আমাদের সমর্থন করেনি, বরং পাকিস্তানীদের সমর্থন করেছিল- তারা বাংলাদেশের অভ্যুদয় মেনে নিতে পারেনি। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিল, জিঘাংসা চরিতার্থ করেছিল। তিনি বলেন, একটি দেশ বঙ্গবন্ধু আমাদের দিয়ে গেছেন, আদর্শ দিয়ে গেছেন। ’৭৫-এর ১৫ আগষ্ট ঘাতকের বুলেট শুধু জাতির পিতাকে কেড়ে নেয়নি, সেই স্বাধীনতার চেতনা ও আদর্শকে বুলেটবিদ্ধ করেছিল, ধ্বংস করে দিয়েছিল। সংবিধানটিকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছিল।
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি অনেককে দেখেছি হয়ত কিছু সময়ের জন্য বিভ্রান্ত হন। কিন্তু দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কখনও ভুল করে না। হয়ত কেউ ক্ষমতার লোভে পড়ে যান। বারবার আঘাত এসেছে, পার্টিও ভেঙ্গেছে। আবার দলকে গড়তে হয়েছে। কাজেই ছাত্রলীগকে বলব সংগঠনটাকে গড়ে তুলতে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা একদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলেছিল, স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশের কী হবে, একটা বাস্কেটকেস হবে! আমার লক্ষ্য- সেই দেশে যে দারিদ্র্যের হার আছে, তার থেকে যদি এক শতাংশও কম হয়, এক শতাংশ কম হলেও আমি বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার কমাব। আমি তাদের দেখাতে চাই, হ্যাঁ আমরাও পারি।
আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর সহযোগী সংগঠনগুলোকে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার লক্ষ্য ছিল দলকে আগে গড়ে তোলা। ক্ষমতায় যেতে হবে তখনই যখন দেশের মানুষের জন্য কাজ করার শক্তি নিয়ে যাচ্ছি। যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার লোভ আমি করিনি, করবও না। আমার লক্ষ্য ছিল, আমি ক্ষমতা চাই দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে। এভাবে আমি ক্ষমতায় আসতে সক্ষম হয়েছি, কাজও করছি।
ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগকে সবসময় আদর্শ নিয়ে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। ক্ষমতা, লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে নিজেদের আদর্শবান কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করতে পারলে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়া কোন কঠিন কাজ নয়। কাজেই আমি এটুকু চাইব- রাজনৈতিক নেতা হিসেবে যারা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করতে চাও, আদর্শ নিয়ে সততার সঙ্গে প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে হবে। চলমান বিশ্বে সব সময় নিজের গতি ঠিক রেখে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে যেতে হবে- তবেই এ দেশের নেতৃত্ব দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নপূরণ করতে পারবে।
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র আছে আমি জানি। কিন্তু একটা আদর্শ নিয়ে চলতে গেলে, আর একটা লক্ষ্য স্থির করে চললে, আর বাংলাদেশের তৃণমূলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে গেলে যারা উপর থেকে বেশি বেশি খায়, বেশি বেশি পায় তাদের তো একটা দুঃখ থাকেই। তারা ভাবে আমাদের বোধ হয় জায়গা হবে না। সেজন্য ষড়যন্ত্র করতেই থাকে। আর কিছু লোকের তো লক্ষ্যই থাকে- ওই একটা পতাকা পেতে হবে বা একটু ক্ষমতায় যেতে হবে ইত্যাদি। এই ধরনের যাদের আকাক্সক্ষা বেশি তারা তো দেশের মানুষের ভাগ্যের কথা চিন্তা করে না। তাই তারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকে। কিন্তু নীতি-আদর্শ নিয়ে চললে আর সৎ পথে চললে যে কোন বাধা অতিক্রম করা যায়। সেটাই প্রমাণ করেছি আমরা।
দেশী-বিদেশী শত ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন হয়েছে একটা সিদ্ধান্ত থেকে। যেদিন পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের দোষারোপ করল, দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলল। সেটাকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলাম এবং বিশ্ব ব্যাংক যখন প্রমাণ করতে পারেনি, তারপরই বিশ্ববাসী বা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, এক সময় যাদের কাছ থেকে আমরা ঋণ নিলে তারা মনে করত যে আমাদেরকে খুব করুণা করল। আমি কিন্তু সেই চিন্তা থেকে বাংলাদেশকে সরিয়ে এনেছি- আমরা ঋণ নিয়ে সুদসহ সেটা শোধ দেই। এটা কখনও অনুদান নয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কাজেই আমরা কিন্তু এখন পরনির্ভরশীল নই। আমাদের উন্নয়ন প্রকল্প আমরা স্ব-অর্থায়নে করতে পারি। সেটা আমরা দেখিয়ে দিয়েছি এবং পদ্মা সেতু আমরা স্ব-অর্থায়নে যে করতে পারি সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। এই একটা সিদ্ধান্ত (পদ্মা সেতু নির্মাণ) থেকেই কিন্তু সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পাল্টে গেছে। এখন কেউ আমাদের করুণা করতে সাহস পায় না, বরং আমাদের সমীহ করে চলতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এই অর্জনটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। কারণ আমাদের দেশের কিছু মানুষ সেই পাকিস্তান আমল থেকে দেখছি, সব সময় কোন একটা প্রভু খুঁজে নিয়ে তাদের পদলেহন করতে ব্যস্ত থাকে। তাদের কোন আত্মমর্যাদা বোধ নেই, তাদের নিজের প্রতি কোন আত্মবিশ্বাস নেই। এদের দিয়ে মানুষের কল্যাণ হয় না। জাতির পিতাকে স্বাধীনতার পর অনেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছেন- এদেশে তো কিছু নেই, আপনি কি দিয়ে এই দেশ গড়বেন? জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘আমার মাটি আছে, মানুষ আছে। এই মাটি, মানুষ দিয়েই আমি দেশ গড়ব।’ মাটি ও মানুষ দিয়ে যে দেশ গড়া যায় সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।
জাতির পিতার বলে যাওয়া কথা ‘মহান অর্জনের জন্য মহান আত্মত্যাগ দরকার’ ছাত্রলীগকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কাজেই আমাদের ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীকে মনে রাখতে হবে- তারা কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়, দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। নিজেদের এ সবের ঊর্ধ্বে রেখে দেশ যেন শান্তির পথে, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। ছাত্রলীগের মূলমন্ত্র শিক্ষা,শান্তি এবং প্রগতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ^ এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের এগোতে হবে। কম্পিউটার শিক্ষা, প্রযুক্তি শিক্ষা, ইন্টারনেট ব্যবহার, সকলের হাতে হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে দেয়া- আমরা সবই করে দিয়েছি। ২০০৮ সাল থেকে একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে আজকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযুক্তির ব্যবহার পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। কাজেই মানুষকে আর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নেই। মানুষের দৃষ্টি খুলে গেছে, কেননা হাতের মুঠোয় পৃথিবী এসে গেছে।
প্রযুক্তির পথ ধরে এগিয়ে চলাটাই তাঁর সরকারের লক্ষ্য এবং সে পথটাই তাঁরা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই প্রগতির পথে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।’৪১ সাল নাগাদ এই বাংলাদেশ বিশে^ একটা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। দেশকে এগিয়ে নেয়ার তাঁর সরকারের পঞ্চবার্ষিকী এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনার উল্লেখ করে ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে সুশিক্ষিত হয়ে গড়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ’৪১-এর উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের সৈনিক হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তোলার প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হবে।
নীতি এবং আদর্শ নিয়ে চললে সকল বাধা যে অতিক্রম করা যায় তা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল, অধিকার হারা মানুষের কথা বলেই এই সংগঠন তৈরি। এই গর্বটা থাকতে হবে কিন্তু সেটা যেন আবার অহমিকায় পরিণত না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে, বিনয়ী হতে হবে। আর দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে। এ প্রসঙ্গে খ্যাতনামা সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টের সঙ্গে জাতির পিতার ইন্টারভিউতে করা বিখ্যাত উক্তি ‘আই লাভ মাই পিপল’, ‘আই লাভ দেম টু মাচ’ এর উদ্ধৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, সত্যিই জাতির পিতা এ দেশের মানুষকে ভীষণ ভালবাসতেন। তবে, যাঁদেরকে অতিরিক্ত ভালবেসেছেন তাদের কাছ থেকেই তাঁকে গুলির শিকার হতে হয়েছে, সেটাই দুর্ভাগ্যের বিষয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বুলেট, বোমা- অনেক কিছুই তো মোকাবিলা করেছি। সেই চিন্তা করি না কিন্তু দেশটাকে যেখানে নিয়ে এলাম সেই গতিটা যেন অব্যাহত থাকে। আবার যেন আমাদের পিছিয়ে যেতে না হয়। ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগসহ আমাদের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সকলকেই এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে- আবার যেন কোন হায়েনার দল এসে এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ছাত্রলীগসহ সাবেক ছাত্রনেতা এবং বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকেও জাতির পিতার লিখে যাওয়া ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’, ‘আমার দেখা নয়াচীন’ এবং তাঁর সম্পাদিত পাকিস্তানী গোয়েন্দা রিপোর্ট নিয়ে রচিত- ‘সিক্রেট ডকুমেন্ট অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দি নেশন, বাংলাদেশ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ সিরিজের বইগুলো পড়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি দেশপ্রেম না থাকে, জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ না থাকে- তাহলে শুধু ক্ষমতায় বসে ক্ষমতাকে উপভোগ করা যায়। দেশের উন্নতি করা যায় না। ’৭৫-এর পর হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে যারা এদেশের ক্ষমতা দখল করেছিল তারা বিলাসিতায় গা ভাসিয়েছে। নিজেদের সুবিধার জন্য সুবিধাভোগী একটি এলিট শ্রেণী তৈরি করলেও মানুষ যে তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই থেকে গেছে। বাংলাদেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। দেশের শতভাগ মানুষের ঘরে আমরা বিদ্যুত পৌঁছে দিয়েছি। প্রতিটি গৃহহীন মানুষকে আমরা ঘরে করে দিচ্ছি। ইনশাল্লাহ! বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবই।